ডিসেম্বর ১০, ২০২১, ০২:৪৭ পিএম
দেশে মোট পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও অধিকাংশই পেশাগত ও পারিবাররিক প্রয়োজনের খাতিরে ভ্রমণ করছে। দেশের অভ্যন্তরে বিনোদন, অবসর কিংবা বনভোজনের জন্য পর্যটক কমে গিয়েছে। দেশের বাহিরে ভ্রমণেও ছুটি কাটানোর প্রবণতা কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘ট্যুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট’ শীর্ষক জরিপে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই ভ্রমণ করে ৯০ শতাংশ
ছুট,অবসর ও বিনোদনের জন্য দেশে মাত্র ৫.২০ শতাংশ ব্যক্তি ভ্রমণ করে। এর বিপরীতে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের সাথে সাক্ষাতের জন্য ৫৭.৩৮ শতাংশ ব্যক্তি ভ্রমণ করেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে ১৬.৩০ শতাংশ ব্যক্তি ভ্রমণ করছে। ব্যবসা ও পেশার সুবাদে ভ্রমণ করছে ৩.৫০ শতাংশ। আর পিকনিক ও বনভোজনে ভ্রমণ করছে ৩.২১ শতাংশ।
সব মিলিয়ে শুধু চিত্তবিনোদন ও অবসরের জন্য ভ্রমণ করছে ৮.৪১ শতাংশ ব্যক্তি। বাকি ৯১.৫৯ শতাংশ ব্যক্তিরাই ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কারনের পাশাপাশি ভ্রমণ করছে।
তবে বিদেশে ১২.৭৭ শতাংশ ভ্রমণ করেছে চিত্তবিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর জন্য। চিকিৎসার জন্য ১৫.৭৬ ও আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করতে ৪৫.১১ শতাংশ বিদেশে যায়।
পর্যটন খাতের অবদান জানতে জরিপ
দেশে পর্যটকের সংখ্যা ও ভ্রমণ ব্যয়ের পরিমাণ জানা এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) পর্যটন খাতের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই জরিপ করা হয়। দেশে করোনার সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার ঠিক আগে গত বছরের মার্চ মাসে জরিপের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাইরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে এক রাতের বেশি সময় কাটিয়েছেন, তাঁদেরই জরিপে পর্যটক হিসেবে ধরেছে বিবিএস।
জানতে চাইলে এই জরিপ প্রকল্পের পরিচালক তোফায়েল আহমেদ বলেন, জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান কত, তা জানা ছিল না। জরিপের মাধ্যমে সেটি বের করা হয়েছে। তা ছাড়া জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) পর্যটন খাতের তথ্য দেওয়ার জন্যও জরিপটি করার দরকার ছিল।
জরিপের আলোকে বিবিএস বলছে, জিডিপিতে এখন পর্যটন খাতের অবদান ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা।
ডিসেম্বর মাস ভ্রমণ বেশি
জরিপে সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, ভ্রমণের জন্য ডিসেম্বর মাস বেশি পছন্দ। কারণ, এই মাসে পরিবেশ ও আবহাওয়া বেশি অনুকূলে থাকে। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকে। এরপর পছন্দের সময় জুন ও জানুয়ারি মাস।
অঞ্চল ভিত্তিতে দেখা যায়, দেশ-বিদেশে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন সিলেট বিভাগের মানুষ। এই বিভাগের ১৭ শতাংশ খানার মানুষ ভ্রমণ করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ মানুষ ভ্রমণ করেন রাজশাহী বিভাগের। তৃতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা বিভাগ, যেখানকার ১৪ শতাংশ মানুষ ভ্রমণে বের হন। আর ভ্রমণে সবচেয়ে পিছিয়ে ময়মনসিংহের মানুষ, এখানের মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ ভ্রমণ করেন।