ডিসেম্বর ২৮, ২০২১, ০২:১৮ পিএম
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এবার এক নিহতের স্বজন মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) মনির হোসেন নামে ওই স্বজন ঝালকাঠি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট চারটি মামলা দায়ের হলো।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান মামলার বিষয়টি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “মামলায় লঞ্চের মালিকসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নৌযান আইনে দায়ের করা মামলায় বাদী অভিযোগ করেছেন, গাফিলতির মাধ্যমে তার স্বজনসহ অন্য যাত্রীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আরজিতে তিনি এর বিচার চেয়েছেন।”
এর আগে এ ঘটনায় আরও তিনটি মামলা হয়। শনিবার বরগুনা থানায় বরগুনা সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। নাজমুল ইসলাম নাসি নামে বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাদী হয়ে বরগুনার আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর থেকে ঢাকার নৌ আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে টানা ৫ম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল আরও দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। এনিয়ে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের দেহ উদ্ধার করা হলো।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, বরিশালের সহকারি পরিচালক মো. কোবাদ আলী সরকার বিষয়টি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ৫ম দিনের মতো মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে সুগন্ধা নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল। সাড়ে ৮টার দিকে আনুমানিক ৩০-৩২ বছর বয়সী এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে তারা। যুবকটির নাম ও পরিচয় এখনও জানা যায়নি।” দুপুর ১২টার পর আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ময়না তদন্তের জন্য মরদেহগুলো ঝালকাঠি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” এখনও অনেক যাত্রী নিখোঁজ থাকায় উদ্ধার অভিযান চলবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে, সোমবার সকালে সদর উপজেলার কিস্তাকাঠি এলাকার বিষখালী নদীর পাড় থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ব্যাক্তির বয়স আনুমানিক ৪০ বছর এবং পেটে পোড়া দাগ রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সকালে স্থানীয়রা নদীতে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে রাজাপুর ও ঝালকাঠি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তবে এখনো তার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। স্বজনরা এসে চিনতে পারলে তাদের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ নামে ওই লঞ্চে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৭০ জনের বেশি। অনেকে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ ও আহতদের অনেককে তাদেরকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল ও ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।