নিজের দেশের গেইমের নাম নিজের নামে হবে বলে অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘হাউজ্যাট: মুশি দ্য ডিপেন্ডেবল’ নামের একটি গেইম অ্যাপের উদ্বোধনকালে এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্ভরযোগ্য এ খেলোয়াড়।
গেইমটি প্রসঙ্গে মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘আমি আগে এতটা ভাল ক্রিকেট খেলতাম না, এখন মোটামুটি আপনাদের চোখে আমি ভাল খেলোয়াড়। এই গেইমটিও তেমন। ধীরে ধীরে ডেভলপ করবে’।
তিনি তার ফ্যানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার ফ্যানদের বলতে চাই আপনারা গেমসটি প্লে স্টোর থেকে নামাবেন এবং খেলবেন’। এসময় তিনি অন্যদের প্রতিও এই গেইমটি খেলার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এই গেমিং অ্যাপটি উদ্বোধন করার আমন্ত্রণ পেয়ে জানলাম, আমাদের দেশের ছেলেরা একটা গেমিং অ্যাপ তৈরি করেছে। এটি একটা বিশ্বমানের গেম’।
তিনি আরও বলেন, আমরা কি সারাজীবন বিদেশী গেমস খেলবো? আমাদের আরো এগোতে হবে। যারা অ্যাপসটি তৈরি করেছে তারা যদি মনে করে তাদের আরো ২০ জন ডেভলপার দরকার বা তাদের ট্রেনিং দরকার তাহলে বাংলাদেশ আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে ফান্ডিং করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, যেভাবে মুশফিকুর রহিম যেভাবে আমাদের দেশকে অনেক জয় এনে দিয়েছেন। আগামীদিনে গেমিং বিশ্বেও আমরা নেতৃত্বে দিতে পারব এই প্রত্যাশা করছি’।
গেইমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেপিসি এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুর রহমান জানান, অ্যাপটির বেটা ভার্সন গুগল অ্যাপ স্টোরে আপলোড করা হয়। মাত্র ২৪ ঘন্টায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বশি সাবস্ক্রিপশন যুক্ত হয়, এক সপ্তাহে ৫০ লাখ বার খেলা হয়েছে গেমটি।
তিনি আরো বলেন, প্রায় আড়াই বছরের প্রচেষ্টার ফসল এই অ্যাপ। তবে মূল কাজ শুরু হয় গত মে মাসে। আটজন তরুণ প্রোগ্রামার গেমসটির প্রোগ্রামিংয়ের কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে উদ্যোগটিতে প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমাণ ৬০ লাখ টাকা। এর সঙ্গে অংশীদার হিসেবে আগামী দুই বছরের জন্য যুক্ত হয়েছেন স্বয়ং ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। তিনি এই মোবাইল গেমসটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তথা পণ্যদূত হিসেবেও কাজ করবেন। মুশফিক ফাউন্ডেশন নামে মুশফিকের একটা সামাজিক সংগঠন আছে। আমরা এই গেমসের একটা লভ্যাংশ এই ফাউন্ডেশনে দিব।
গেমিং অ্যাপটিতে ক্রিকেটের প্রায় সব ধরনের ব্যাটিং এবং বোলিং অ্যাকশান যুক্ত করা হয়েছে। রয়েছে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ মোড: জেনারেল, মাল্টিপেয়ার এবং লিজেন্ডারি। সব মিলে শতাধিক অপশন আর ফাংশন। ঘরে বসে মাঠের অনুভূতি দেবার জন্য যুক্ত করা হয়েছে হাইডেফিনেশন গ্রাফিক্স।
গেমসটি খেলায় টুর্নামেন্ট জিতলে কিংবা সর্বোচ্চ রান করলে মুশফিকের জার্সি, মুশফিকের অটোগ্রাফ–সংবলিত ব্যাট ইত্যাদি পুরস্কার দেওয়ার চিন্তা করছেন উদ্যোক্তারা। বিনামূল্যে গেমসটি খেলা যাবে। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের মূল আয়ের উৎস হবে বিভিন্ন কোম্পানির স্পনসরশিপ। ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যেমন বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন থাকে, গেমসটির ভার্চু্য়াল মাঠেও তেমনটা থাকবে। ইতিমধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান স্পন্সরও হয়েছে।