৬ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম

৬ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে দ্বিতীয় দিনের মত রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার দিকে জব্বারের মোড় এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এএইচ এম হিমেল বলেন, “সোমবার সকালে আমরা ৬ দফার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো সাড়া নেই। তাই বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে রেলপথ অবরোধ করেছি। প্রশাসন এসে আশ্বস্ত করলেই আমরা অবরোধ তুলে নেব।”

আরেক শিক্ষার্থী ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, “দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হয় এটা বাংলাদেশের কালচার। কিন্তু দাবি আদায়ের আন্দোলনে বহিরাগতদের দিয়ে হামলা করানো কতটা যৌক্তিক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলছে-চলবেই।”

এর আগে প্রায় এক মাস ধরে ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশু পালন অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় দুপুর ১টার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ভিসিসহ আড়াই শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তাকে আটকে রেখে গেইটে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি সমাধানে ক্যাম্পাসে ছুটে যান ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় থাকেন।

সন্ধ্যার পর উপাচার্যের বাসভবনের পাশ থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ জন বহিরাগত দেশি অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে তালা ভেঙে দিলে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বেরিয়ে যান। এ সময় সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন‍্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত‍্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে সকাল ৯টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা ‘কে আর’ মার্কেটে জড়ো হন। পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ছয় দফার আল্টিমেটাম দেন তারা।

পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া নিয়ে এককভাবে আমার কিছু করার নেই। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সুন্দর সিদ্ধান্ত হয়েছিল কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা না মেনে বিপথে হেঁটেছে।

“উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হল ছাড়ার নির্দেশনা না মেনে তারা আন্দোলন করছে। বিষয়টি এখনো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই, জেলা প্রশাসক যা ভালো মনে করবেন তাই হবে।”

তবে এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম সোমবার বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই দেখবে। সেখানে তাদের বলার কিছু নেই।

Link copied!