দীর্ঘদিন ধরে চলা অর্থনৈতিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যেই পদত্যাগ করলেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন।রবিবার পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট প্যালেসও ছেড়েছেন ৮৯ বছর বয়সী এ খ্রিস্টান প্রেসিডেন্ট।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের চলমান বিপর্যয়মূলক আর্থিক মন্দা এবং বৈরুত বন্দরে মারাত্মক বিস্ফোরণের পর দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মিশেল আউন। তবে দেশকে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে ফেলে পদত্যাগ করলেন তিনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মিশেল আউনের উত্তরসূরি কে হতে যাচ্ছেন, তা জানায়নি দেশটির বর্তমান সরকার। বর্তমানে একটি তত্বাবধায়ক সরকার দেশটি পরিচালনা করছে। গত ছয় মাস ধরে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে। দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকায় এখনও স্থিতিশীলতা ফেরেনি লেবাননে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবাননে মিশেল আউন একজন গভীরভাবে বিভাজনকারী ব্যক্তিত্ব। অনেক খ্রিস্টান তাকে পছন্দ করেন কারণ তারা মূলত আউনকে লেবাননের সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় তাদের রক্ষক হিসাবে দেখে থাকেন। তবে দুর্নীতিকে আরও বাড়িয়ে তোলা এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে প্রভাব অর্জনে সহায়তা করার ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে অনেকে অভিযোগ তুলে থাকেন।
২০১৯ সালের আর্থিক মন্দা মোকাবিলায় মিশেল আউন ব্যর্থ বলেও মনে করেন অনেকে। ওই মন্দা লেবাননের জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশেরও বেশিকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়। ফলশ্রতিতে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে লেবানন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে লেবাননের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মিশেল আউন। ওইসময় হিজবুল্লাহ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যারোনাইট খ্রিস্টান রাজনীতিবিদ সামির গেগা উভয়ের মধ্যকার একটি চুক্তিতে তাকে এই পদে সমর্থন করা হয়েছিল। ওই চুক্তির ফলে তৎকালীন সুন্নি রাজনীতিবিদ সাদ আল-হারিরি লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হন।
পরবর্তী ছয় বছরের মেয়াদের সময় লেবাননের সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর সহায়তায় ২০১৭ সালে সিরিয়ার সীমান্তে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ২০১৮ সালে একটি নতুন নির্বাচনী আইন পাস হয় এবং শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি কোম্পানিগুলো ২০২০ সালে অফশোর ব্লকগুলোতে অনুসন্ধানমূলক খনন শুরু করে।