মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ তীব্র হওয়ার আশঙ্কা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৬:৩২ পিএম

মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ তীব্র হওয়ার আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

গৃহযুদ্ধের মধ্যে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ঘোষিত জাতীয় নির্বাচনের পরিকল্পনাকে ঘিরে সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্রোহী বহু বাহিনী একইসঙ্গে সরকার ও নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। এ পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষ আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষক, বিদ্রোহী ও কূটনীতিকসহ আট ব্যক্তি জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করার অবস্থা তৈরি হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা জেনারেলরা আরেকটি নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে বৈধতা অর্জনের উদ্যোগ নিয়েছে।

গত দুই মাস ধরে জান্তা সরকার প্রতিবেশীদের কাছে চলতি বছর একটি নির্বাচন করার পরিকল্পনা তুলে ধরে আসছে। তারা ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য আদমশুমারি করে ফলাফল প্রকাশ করেছে আর ভোটের জন্য ‘স্থিতিশীলতা’ নিশ্চিতে কাজ করছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছে।

তাদের এসব পদক্ষেপে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টিকে মিয়ানমারের জান্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। কিন্তু গৃহযুদ্ধের এমন এক সময়ে তারা এ উদ্যোগ নিয়েছে যখন সামরিক বাহিনী দেশজুড়ে নিয়মিতভাবেই একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।

নির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু দেশটির বহু বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু পরীক্ষিত, সামরিকপন্থি দলগুলোকেই ভোটে অংশ গ্রহণ করতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেশব্যাপী নয়, জান্তা ভোটের আয়োজন করতে পারবে শুধু দেশের প্রায় অর্ধেক অংশে। তাদের এসব উদ্যোগ ইতোমধ্যেই সমালোচকদের উপহাসের উপলক্ষ্য হয়েছে, তারা এ নির্বাচনকে ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করেছে।

ডিসেম্বরে আদমশুমারির প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজেমিনে শুমারি করতে সক্ষম হয়েছে জান্তা সরকার। এখন জেনারেলরা বছরের শেষ দিকে শুধু ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে বলে রাজধানী নেপিদোর আলোচনার বিষয়ে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

ভোটের আগে জান্তা এসব এলাকায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় নজর দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে জান্তার এক মুখপাত্রকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত একটি নতুন প্রতিরোধ বাহিনী ও সংখ্যালঘু জাতিগুলোর প্রতিষ্ঠিত বিদ্রোহী বাহিনীগুলো মিলে তৈরি করা একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তার নিয়ন্ত্রণ থেকে বহু এলাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। জান্তা বাহিনীগুলোকে সীমান্ত এলাকাগুলো থেকে হটিয়ে দিয়ে মধ্যাঞ্চলীয় নিম্নভূমির দিকে এগোতে শুরু করেছে তারা।

আসছে নির্বাচনে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পিস ইনস্টিটিউটের মিয়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক মায়ো হাইন বলেন, “এটি অনিবার্যভাবে সংঘাতকে তীব্রতর করে নজিরবিহীন স্তরে নিয়ে যাবে।”

চলতি জানুয়ারি মাসের শেষে মিয়ানমার জুড়ে জারি থাকা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বার্ষিকীর আগেই জান্তা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়াতে পারেন, এমন জল্পনা রয়েছে।

Link copied!