গণবিবাহের আসরে নবদম্পতিকে কনডম ও গর্ভনিরোধক কিট উপহার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অক্টোবর ৮, ২০২৩, ১১:৩০ পিএম

গণবিবাহের আসরে নবদম্পতিকে কনডম ও গর্ভনিরোধক কিট উপহার

ছবি: সংগৃহীত

বিয়েতে উপহার হিসেবে ঘর-সংসারের জিনিস দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এবার  মধ্যপ্রদেশের গণবিবাহের আসরে নবদম্পতিকে দেওয়া হলো কনডম উপহার! জী ঠিকই শুনেছেন আর এই উপহার দেওয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।

কনেদের  ফেলা অর্থহীন, মত বিরোধীদের গণবিবাহের আসরে কনেদের মেকআপ বক্সের ভিতরে দেওয়া হয় কনডম ও গর্ভনিরোধক বড়ির কিট। কিটের উপরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের স্টিকার লাগানো। এমন উপহার দেখে হতবাক নবদম্পতিরাও।

মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলায় আয়োজিত গণবিবাদের অনুষ্ঠানে সরকারি তরফে নবদম্পতিদের দেওয়া হল এক গুচ্ছ কনডম ও গর্ভনিরোধক বড়ি। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকাহ যোজনার’ অধীনে আর্থিক ভাবে দুর্বলদের জন্য আয়োজিত এই গণবিবাহের অনুষ্ঠানে ২৮৩ টি দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হল।

সেখানেই কনেদের মেকআপ বক্সের ভিতরে দেওয়া হয় কনডম ও গর্ভনিরোধক বড়ির কিট। কিটের উপরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের স্টিকার লাগানো। এমন উপহার দেখে হতবাক নবদম্পতিরও। ঝাবুয়ার কালেক্টর তানভি হুডা বলেন, ‘‘জনসচেতনতা তৈরি করতে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে কনডম এবং গর্ভনিরোধক বড়ি বিতরণ করা হয়েছে।’’

কংগ্রেসের তরফে প্রশাসনের এই কাজের সমালোচনা করা হয়েছে। কংগ্রেস এই কাজকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘আপত্তিকর’ বলে দাবি করেছে। ক‌ংগ্রেসের নেতারা পরিবার পরিকল্পনায় সচেতনতা বজায় রাখার বিষয়টি সমর্থন করলেও, এই ধরনের উদ্যোগকে মোটেও সমর্থন করেননি। তাঁদের মতে এই কাজ নবদম্পতিদের সর্বসমক্ষে বিড়ম্বনায় ফেলেছে।

মধ্যপ্রদেশে ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ’ যোজনা নিয়ে এখন চারদিকে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর সরকারি কর্মচারীদের মধ্যেও বিবাদ শুরু হয়েছে। উচ্চ জেলা আধিকারিক ভুরসিং রাওয়াত এই কাজের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের উপর দোষ চাপিয়েছেন। তিনি জানান যে স্বাস্থ্য আধিকারিকরাই পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত একটি সচেতনতামূলক কর্মসূচির অংশ হিসাবে কন্ডোম এবং গর্ভনিরোধক বিতরণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘‘কনডম এবং গর্ভনিরোধক বড়িগুলি বিতরণের জন্য আমরা দায়ী নই৷ রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ পরিবার পরিকল্পনা সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসাবে এই কিটগুলি বিলি করেছে। ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনার’ অধীনে, আমরা নবদম্পতিদের ৪৯ হাজার টাকা দিয়েছি৷

বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আমরা খাদ্য, জল এবং একটি তাঁবুর ব্যবস্থা করেছি। তার জন্য আমাদের ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিয়ের পরে কন্ডোম ও গর্ভনিরোধক বড়ি বিলি করা হবে সে বিষয় আমার কোনও ধারণা ছিল না।’’

মধ্যপ্রদেশ সরকার অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির মহিলাদের বিবাহের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকাহ যোজনা’ চালু করে। এই প্রকল্পের অধীনে, সরকারী তরফে কনের পরিবারকে ৫৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

গত মাসে, ডিন্ডোরির গডসরাই এলাকায় একটি গণবিবাহ অনুষ্ঠানে কিছু নববধূ অন্তঃসত্ত্বা কি না, তা যাচাই করার জন্য তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। এর পরে এই পরিকল্পনাটি নিয়ে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। সেই পরীক্ষায় একজন মহিলার রিপোর্ট ইতিবাচক আসে। তার পরেই গণবিবাহের নামের তালিকা থেকে মহিলার নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।

ডিন্ডোরির চিফ মেডিকেল অফিসার বলেছিলেন যে সাধারণত বর এবং কনের বয়স যাচাই করার জন্য, অ্যানিমিয়া আছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য এবং তারা শারীরিক ভাবে ফিট কি না তা নিশ্চিত করার জন্যই তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়।

Link copied!