সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩, ০৮:১৪ পিএম
বিসমিল্লাহ বলে শূকরের মাংস খাওয়ার ভিডিও তৈরি করার অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ায় এক নারী টিকটকারকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
৩৩ বছর বয়সী লিনা লুৎফিয়াবতীকে `ঘৃণা ছড়ানোর` দায়ে বিতর্কিত ব্লাসফেমি আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কারাদণ্ডের সাথে তাকে ১৬ হাজার ২৪৫ ডলার জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানা পরিশোধ না করলে তাকে আরও তিন মাস কারাবাস ভোগ করতে হবে।
টিকটকে লিনা লুৎফিয়াবতীকে ২০ লাখের বেশি মানুষ অনুসরণ করেন। ভারতের বলিউড চলচ্চিত্রের বড় ভক্ত তিনি। এ কারণে নিজেকে `লিনা মুখার্জি` নামে পরিচয় দেন। ভারতে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আছে।
লিনা লুৎফিয়াবতী গত মার্চে বালিতে ভ্রমণের সময় একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে তিনি শূকরের চামড়া খাওয়ার আগে `বিসমিল্লাহ` উচ্চারণ করেন। লুৎফিয়াবতী পরে বলেন যে তিনি কৌতূহল থেকেই শূকরের মাংস খেয়েছিলেন।
ভিডিওটি `ভাইরাল` হওয়ার পর `মুসলিম হওয়ার পরও জেনে শুনে শূকরের মাংস খাওয়া` নিয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়।
গত মে মাসে লুতফিয়াবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তাতে বলা হয়, ভিডিওটির মাধ্যমে জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো হয়।
ইন্দোনেশিয়ার অনেক রক্ষণশীল গোষ্ঠী ভিডিওটিকে ধর্ম-অবমাননামূলক বলে ফতোয়া দিয়েছে। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ উলেমা কাউন্সিলও রয়েছে।
লিনা লুৎফিয়াবতীর বিরুদ্ধে রায়কে ইন্দোনেশিয়ায় অনেকেই স্বগত জানালেও কিছু মানুষ কারাদণ্ডের সমালোচনাও করছেন। তারা বলছেন, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হলেও ইন্দোনেশিয়ায় এর চেয়ে কম সাজা পেতে হয়।
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্লাসফেমি আইনের সমালোচনা করে আসছে। তাদের ভাষ্য, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে প্রায়শই এই আইন অপব্যবহার করা হয়।
গত বছর ইন্দোনেশিয়ার একটি পানশালায় `মোহাম্মদ` নামের গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যে মদ বিক্রির অভিযোগে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ।
২০১৭ সালে জাকার্তার সাবেক গভর্নর বাসুকি জাহাজা পুরনামা, যিনি আহোক নামেও পরিচিত, ইসলাম অবমাননার অভিযোগে প্রায় দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।