সোমবারের সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্পে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে নোটো উপসাগরে ইশিকাওয়া উপদ্বীপে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০-এ দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আকাশ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। সকাল পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি মানুষকে ইশিকাওয়া ও তোয়ামা উপদ্বীপ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দ্য জাপান টাইমস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকের ফুটেজে ইশিকাওয়া উপদ্বীপের ওয়াজিমা এলাকায় একটি সাততলা ভবন পড়ে থাকতে দেখে গেছে। সেখান থেকে ধোঁয়া উঠতেও দেখা গেছে।
পর্যটনের জন্য খ্যাত এই এলাকাটিতেই অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ জাপানি সংবাদমাধ্যম দ্য আসাহি শিম্বুন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে মূলত হোকুরিকু অঞ্চলে আকাশ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব জাপান রেলওয়ে আজ স্থানীয় সময় সকালে দুর্গত এলাকায় রেল চলাচল বন্ধ রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলো পরীক্ষা করে দেখছে।
পশ্চিম জাপান রেলওয়ে জানিয়েছে, তারা চারটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছিল। আজ স্থানীয় সময় ভোরে তা আবার চালু করা হয়।
এ ছাড়াও, নিপ্পন এয়ারওয়েজ নোটো ও কোমাৎসু বিমানবন্দরে আটটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ভূমিকম্পে রাস্তা ভেঙে পড়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাপান সড়ক পরিবহন তথ্যকেন্দ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে—আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তোকাই-হোকুরিকু এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্প কবলিত ইশিকাওয়া উপদ্বীপের অনেক এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। স্থানীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গণমাধ্যমকে জানান, সরকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে ইশিকাওয়ায় জরুরি দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্র খুলেছে।
তিনি বলেন, সময় যত যাচ্ছে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। যারা ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করা প্রয়োজন। এজন্য প্রায় এক হাজার কর্মী উদ্ধার কাজ করছে।
ইশিকাওয়া উপদ্বীপে প্রায় ৩৩ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। কয়েকটি শহরে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ১৯টি চিকিৎসা দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করছে।
সেই এলাকায় আজ রাতে বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে ভূমিধসের আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত জাপানে ১৫৫ বার ছোট ছোট ভূকম্পন হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে—অধিকাংশ কম্পন ছিল তিন মাত্রার। তবে এর মধ্যে ছয় মাত্রার কম্পনও ছিল।