শতাব্দীর প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে মরক্কোতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯০০ জনে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি।
দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় এই ভূমিকম্পে হতাহতদের উদ্ধারসহ জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য মরক্কোর প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে স্পেন, ব্রিটেন ও কাতারের অনুসন্ধানকারী দলগুলো। এছাড়াও তুরস্ক, কাতার, ফ্রান্স, জার্মানি, ইসরায়েল, দুবাই, জর্ডানসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মরক্কোর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক দেশ।
প্রসঙ্গত, সোমবার মধ্যরাতে মরক্কোর একটি রাষ্ট্রীয় টিভির খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২ হাজার ৮৬২ জনে পৌঁছেছে এবং আহতের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৫৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। ভূমিকম্প আঘাত হানা অঞ্চলের বেশির ভাগই দুর্গম এলাকার হওয়ায় নিখোঁজদের পরিসংখ্যান জানায়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১তে মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে ছয় দশমিক আট মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাকেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে অ্যাটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। ১৯৬০ সালের পর এটিকে দেশটির সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও মরক্কো এর আগেও বেশ কয়েকবার ভয়াবহ ভূমিকম্পের কবলে পড়েছিল। ২০০৪ সালে দেশটির উত্তর-পূর্বের আল হোসেইমা অঞ্চলে ভূমিকম্পে মারা গিয়েছিলো ৬২৮ জন। এছাড়াও, ১৯৬০ সালে আগাদির অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ১২ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
এগুলো থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এবারের ভূমিকম্পেও হতাহতের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বাড়তে পারে।
মরক্কোর এবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল অ্যাটলাস পর্বতমালার মধ্যে। ঐ অঞ্চলে এমন অনেক দুর্গম গ্রাম রয়েছে যেখানে পৌঁছানো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। মনে করা হচ্ছে এই অঞ্চলের ভূ-অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের ফলে অ্যাটলাস পাহাড়ে যে ধাক্কা লাগছে তার সাথে এই ভূমিকম্পের সম্পর্ক আছে। বিপরীতভাবে আঘাত হানা তির্যক ফল্টিংয়ের কারণেই ভূমিকম্পটি সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃপক্ষ।
তাই এ ভূমিকম্পের আসল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতটা হতে পারে, তা নিশ্চিতভাবে জানতে বেশ কয়েকদিন লেগে যাতে পারে।