জুন ৫, ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা এক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বিদেশি সন্ত্রাসী’ ও অন্যান্য হুমকি থেকে সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিল।
যে দেশগুলির নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সেগুলো হল ইরান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, লিবিয়া, সুদান, ইয়েমেন, শাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি ও সোমালিয়া।
এর পাশাপাশি আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এসব দেশ হল লাওস, তুর্কেমেনিস্তান, কিউবা, ভেনেজুয়েলা, বুরুন্ডি, সিয়েরা লিওন ও টোগো।
মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ প্রথম এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার খবর দেয় বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম এক্স এ পোস্ট করা এক ভিডিওতে ট্রাম্প বলেছেন, “যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় এমন লোকজনকে আমাদের দেশে প্রবেশ করার অনুমতি দেবো না আমরা।”
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় মান সময় অনুযায়ী ২০২৫ এর ৯ জুন (আগামী সোমবার) রাত ১২টা ১মিনিট থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হবে। আদেশে আরও বলা হয়েছে, এই তারিখের আগে ইস্যু করা ভিসাগুলো বাতিল করা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদকালেও ট্রাম্প সাতটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট দলীয় জো বাইডেন, যিনি ট্রাম্পের পর ক্ষমতায় আসেন, ২০২১ সালে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিলেন। বাইডেন এই নিষেধাজ্ঞাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় বিবেকের ওপর একটি কলঙ্ক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, যে দেশগুলো সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে তারা ‘সন্ত্রাসীদের বড় ধরনের উপস্থিতিকে’ আশ্রয় দেওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল, তারা ভিসা নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে আর ভ্রমণকারীদের পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের অক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি এসব দেশগুলোর অপরাধমূলক রেকর্ড সংরক্ষণ অপর্যাপ্ত এবং তাদের নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র অবস্থানের হার উচ্চ।
ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা এমন কোনো দেশ থেকে উন্মুক্ত অভিবাসন নিতে পারিনা যেখানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের ইচ্ছুকদের নিরাপদে ও নির্ভরযোগ্যভাবে পরীক্ষা ও যাচাই করতে পারি না।”
এ প্রসঙ্গে তিনি গত রোববার কলোরাডোর বোল্ডার শহরে হওয়া হামলার কথা উল্লেখ করেন। ওই ঘটনায় এক ব্যক্তি ইসরায়েলপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর একটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। এই ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে এসব কারণেই নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
এই হামলার ঘটনায় মোহাম্মদ সাবরি সোলাইমান নামের এক মিশরীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোলাইমান যুক্তরাষ্ট্রে তার পর্যটক ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেখানে অবস্থান করছিলেন এবং তার কাছে মেয়াদহীন একটি ওয়ার্ক পারমিটও পাওয়া গেছে।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন যে দেশগুলোর ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সেগুলোর তালিকায় মিশরের নাম নেই।