কট্টর দক্ষিণপন্থি সংগঠনের প্রধান স্টুয়ার্ট রোহডসের নির্দেশেই আমেরিকার ক্যাপিটল ভবনে আক্রমণ চালিয়েছিল দাঙ্গাকারীরা। পৃথক পৃথক মামলায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে সেই থেকে। তবে ওই মামলার মূল চক্রী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন ৫৭ বছরের এই স্টুয়ার্ট রোহডসই। বৃহস্পতিবার তাকে ১৮ বছরের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
মার্কিন ফেডারেল কোর্ট এদিন কী রায় দেয়, তা নিয়ে অনেকেরই উৎসাহ ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানিয়েছিলেন সরকারি আইনজীবী। মূলতঃ রোডহসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী ধারা প্রয়োগের আবেদন জানানো হয়।
সন্ত্রাসবাদী ধারা যুক্ত না করলেও রোডহসের কাজ যে সন্ত্রাসবাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, তা মেনে নিয়েছেন ফেডারেল বিচারক। বিচারক অমিত মেহেতার কাছে ২৫ বছরের সাজা ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চরমতম কোনো সাজা ঘোষণা করেননি তিনি। ১৮ বছরের কারাবাস ঘোষণা করেছেন। এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে রোহডস দোষী প্রমাণিত হয়েছিল।
কী ঘটেছিল সেদিন
২০২০ সালের নির্বাচনে হারের পর নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ নেওয়ার কথা ছিল জানুয়ারি মাসে। তার ঠিক আগে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবন আক্রমণ করেন একদল ট্রাম্পভক্ত। ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে ঢুকে কার্যত সবকিছু তছনছ করে দেন তারা। অভিযোগ আছে, রোহডসের নির্দেশেই ওই দলটি ক্যাপিটল ভবনে আক্রমণ চালিয়েছিল। যদিও রোহডসের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেল ক্য়াপিটল ভবনের ভেতরে ঢোকেননি। বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কাউকে ভেতরে ঢোকার নির্দেশও দেননি তিনি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
বিচারক জানিয়েছেন, রোহডস অত্যন্ত স্মার্ট একজন ব্যক্তি। তিনি যা বলেন, মানুষ তা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনে। আর সেটাই সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ। তাঁর কথা শুনেই একদল মানুষ সেদিন ক্যাপিটল আক্রমণ করে। ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে। সে কারণেই চরম শাস্তি তাঁর পাওয়া উচিত।
রোডহসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ না লাগালেও বিচারক মুখে বলেছেন, রোহডস যা করেছেন, তা কোনো অংশেই সন্ত্রাসবাদের চেয়ে কম নয়। সন্ত্রাসবাদের চার্জ তাঁর বিরুদ্ধে আনাই যায়। তবে সিডিশন বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গোষ্ঠীটিকে উসকে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগ নিয়েও আদালতে শুনানি চলছে। বস্তুত, দেশকে বাঁচাতে এমনই কিছু করা উচিত বলে প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
রায়ের দিন আদালত কক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় রোহডসও বলেছেন, তিনি যা করেছেন, তা দেশকে বাঁচানোর স্বার্থে করেছেন।
সূত্র: বিবিসি ও ডয়চে ভেলে