ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির (২২) মৃত্যুর প্রতিবাদে গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে আরও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তাঁরা হলেন, মোহাম্মদ মেহদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনি। এ নিয়ে চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
কারামি ও হোসেইনির বিরুদ্ধে গত বছর রাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন এ অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও গত বছরের ৩ নভেম্বর কারাজ শহরে নিহত হওয়া ইরানের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের সদস্য সৈয়দ রুহোল্লাহ আজামিয়ানকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে কারামির আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেই আগাসি টুইটারে লেখেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে পরিবারের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন কারামি। তবে তাঁকে সে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া মামলা লড়তে আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি না পাওয়ায় গত বুধবার থেকে আমরণ অনশন করছিলেন ২১ বছর বয়সী চ্যাম্পিয়ন কারাতে খেলোয়াড় কারামি।
তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর গত ডিসেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়ে আকুতি জানিয়ে কারামির বাবা বলেন, ‘দয়া করে আমার ছেলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ তুলে নিন।’
ইরানের সরকারি হিসাবে, ৪১ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএচআর) হিসাবে, ইরানে চলমান বিক্ষোভ জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে অথবা মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য এমন অপরাধের দায় তোলা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনির মৃত্যু হয়। হিজাব নীতি না মানার অভিযোগে এর তিন দিন আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ করছে ইরান সরকার।