উত্তর পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার টাইগ্রে অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের ফলে চার লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (২ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম বৈঠকে টাইগ্রে সংকট নিয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মানবাধিকার সহায়তা তহবিলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রমেশ রাজাসিংহাম।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা জানান, কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ইথিওপিয়ায়। প্রায় ৫২ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এই দুর্ভিক্ষের ফলে কমপক্ষে ৩৩ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এ ছাড়া আটমাস ধরে চলা এই সংঘাতে আরও ১৮ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
গত সোমবার ইথিওপিয়ার সরকার একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দিলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠী টাইগ্রে পিপল’স লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানায়।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গতকাল শুক্রবার কয়েক হাজার বন্দি সরকারি সেনাসদস্যকে টাইগ্রের রাজধানী মেকেল্লে অভিমুখে সড়কে মার্চ করানো হয়েছে।
গত আট মাসের সংঘাতে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। উভয়পক্ষের বিরুদ্ধেই গণহারে মানুষ হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
এক নজরে টাইগ্রে সংকট
ইথিওপিয়ায় গোষ্ঠীগত পার্থক্যের ভিত্তিতে ১০টি আঞ্চলিক প্রদেশ রয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থা কার্যকর থাকলেও এগুলো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত থাকে।
২০১৮ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন আবি আহমেদ। তিনি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বেশকিছু সংস্কার আনেন।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় টাইগ্রে প্রদেশের ক্ষমতাবান রাজনীতিকদের অভিযোগ, আবি আহমেদ ফেডারেল সরকারের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
টাইগ্রে অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিতে হামলার অভিযোগে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরে সেনাবাহিনীকে নামানো হয়। এরপরই মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টাইগ্রে অঞ্চলের বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়।
নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী অভিযানের ঘোষণা দিলেও এর আগেই ২১ জুনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মূলত সংঘাতের সূচনা হয়।
সূত্র: বিবিসি।