নভেম্বর ১৩, ২০২২, ০৭:৩৯ পিএম
কূটনৈতিক আর কাগজপত্রের জটিলতায় দেড় যুগ ধরে ফ্রান্সের প্যারিস বিমানবন্দরে বসবাস করা ইরানের নাগরিক মেহরান করিমি নাসেরি মারা গেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে শার্লস দ্য গল বিমানবন্দরের টু-এফ টার্মিনালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, অসুস্থতার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তার।
মেহরান করিমি নাসেরি ১৯৮৮ সালে প্যারিসের শার্লস দ্য গল বিমানবন্দরে বসবাস শুরু করেন। এ সময় নিজেকে স্যার আলফ্রেড নামে পরিচয় দিতেন। বিমানবন্দরের লাল সোফায় বসে লিখতেন নিজের আত্মজীবনী। তাঁর ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’ নামের সেই আত্মজীবনী ২০০৪ সালে বই হিসেবে প্রকাশ করেন ব্রিটিশ লেখক অ্যান্ড্রু ডনকিন।
হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ তাঁর লেখা বই অবলম্বনে ওই বছরই ‘দ্য টার্মিনাল’ সিনেমা তৈরি করেন। সিনেমাটিতে নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। তাঁর বিপরীতে ছিলেন অভিনেত্রী ক্যাথেরিন জেটা জোন্সও। ঘটনাবহুল নাসেরির জীবনের পুরো চিত্রই ওঠে এসেছে সিনেমায়। সিনেমাটি সব মহলে প্রশংসা পায়।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৪৫ সালে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের মসজিদে সোলেমান এলাকায় জন্ম নাসেরির। নিজের জিনিসপত্রের ট্রলি দিয়ে ঘেরা বেঞ্চে নাসেরি তাঁর জীবন সম্পর্কে লিখে এবং বই ও সংবাদপত্র পড়ে দিন কাটাতেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে নাসেরির এই করুণ কাহিনী ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। ১৯৯৯ সালে শরণার্থীর মর্যাদা পেলেও ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিমানবন্দরেই ছিলেন নাসেরি।
‘দ্য টার্মিনাল’ সিনেমা থেকে সালে পাওয়া ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পুঁজি নিয়ে একটি হোস্টেলে থাকতেন তিনি। তবে ওই পরিবেশ তাঁর ভাল লাগেনি। যেখানে তাঁর ১৮টি বছর কেটেছে সেখানে সেই টার্মিনালেই তিনি চার সপ্তাহ আগে ফিরে আসেন। সেখানেই তাঁর জীবনের সমাপ্তি ঘটল।