এপ্রিল ২২, ২০২৩, ১০:১৮ পিএম
এখন থেকে আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন।দেশটির একাধিক নিম্ন আদালত গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিলেও সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে ওই ওষুধটি ব্যবহারের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত ওই রায় ঘোষণা করে বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রেই এই ওষুধটি ব্যবহার করা যাবে। এর অর্থ হলো- মার্কিন মহিলারা আপাতত গর্ভপাতের ওষুধ ‘মাইফপ্রিস্টোন’ ব্যবহার করতে পারবেন।
সুপ্রিম কোর্টের সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল বিচারক ম্যাথিউ ক্যাস্কমারিখ গত ৭ এ্রপ্রিল প্রাথমিকভাবে গর্ভপাতের ওষুধ ব্যাবহারের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, দেশের বিচার বিভাগ ও ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ড্যাঙ্কো ল্যাবরেটরিজ কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্থগিত করা হলো।
গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক নিম্ন আদালত। তবে ওই নিষেধাজ্ঞা জারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন মার্কিন বিচার বিভাগ ও ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ড্যাঙ্কো ল্যাবরেটরিজ। মার্কিন নারীরা গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন কিনা-এমন প্রশ্নে একাধিক নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের আপিল করার কারণে বিষয়টির সমাধানে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয়।
গতকাল শুক্রবার ওই ৯ বিচারপতির মধ্যে ৬ জনই গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহারের পক্ষে রায় দেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের রায়ের ফলে মার্কিন নারীদের গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহারে এখন থেকে আর কোনো বাধা থাকলো না। তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রেই এই ওষুধটি ব্যবহার করা যাবে বলে রায়ে বলেছেন আদালত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত বলে দিয়েছেন কোন ওষুধটি ব্যবহার করতে পারবেন মার্কিন নারীরা। আদালতের রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, গর্ভপাতের ওষুধটি যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পরে গর্ভাবস্থারোধের জন্য যে ওষুধ খাওয়া হয়, সেটি নয়। অর্থাৎ, এটি গর্ভনিরোধক বড়ি নয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, যখন কোনও মহিলা জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। অর্থাৎ ভ্রূণহত্যায় নারীরা এই ওষুধটি ব্যবহার করতে পারবেন। ২০০০ সালে মাইফপ্রিস্টোন-কে অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। গর্ভাবস্থার ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত এই ওষুধ ব্যবহার করা যায়। এর পরে গর্ভপাত অন্য পদ্ধতিতে করতে হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছর গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। বিশ্বের একেবারে প্রথম সারির একটি দেশে এমন ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় মানুষ। এর মধ্যেই টেক্সাস এবং ওয়াশিংটনের ফেডারেল বিচারক বিপরীত রায় দেন।
গর্ভপাতের অধিকার খর্ব করে দেওয়ার পরই গর্ভপাতের ওষুধ ‘মাইফপ্রিস্টোন’ নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশের ফেডারেল আদালতে বিচার চলে। গর্ভপাতের ওষুধটিকে এফডিএ যে অনুমোদন দিয়েছিল তা স্থগিত করে দেয় টেক্সাসের আদালত। বিচার বিভাগকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে তারা আবেদন জানাতে পারবে। পরবর্তীতে এফডিএ কর্মকর্তারা ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন।