যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আন্দ্রেয়া মিসৌরি বিচারের সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। সোমবার থেকে আইওয়ার আদালতে ওই প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু করেছেন প্রসিকিউটররা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে এভাবে সাংবাদিকের গ্রেপ্তার ও বিচাররের ঘটনা বিরল। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির মানাবধিকার কর্মী ও সাংবাদিকরা। তারা বলেছেন, সংবাদ ও ছবি-ভিডিও সংগ্রহ সাংবাদিকের অধিকার। এ দায়িত্ব পালনের জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা অনৈতিক-অন্যায়।
কৃষ্ণকায় যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় গত বছরের ৩১ মে সংবাদ মাধ্যম ডেস ময়েন্স রেজিস্ট্রার-এর প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন আন্ড্রে সাহৌরি। সেসময় পিপার স্প্রে ছিটিয়ে আন্দ্রেয়া মিসৌরি ও সঙ্গে থাকা তার বয়ফ্রেন্ড স্পেনসার রোবনেট-কেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতা এবং দুষ্কৃতিদের হস্তক্ষেপে সরকারী কাজে বাধাদানের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় তাদের ৩০ দিনের জেল হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সাংবদিকতা পেশার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার ও পরবর্তীতে বিচারের মুখোমুখি হওয়া এ ঘটনাকে বিরল বলে অবিহিত করেছেন মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মীরা। এ ঘটনা সাংবাদিকতার পেশাদার ও স্বাধীনতার পথকে রুদ্ধ করবে বলে অভিযোগ তাদের। দেশটির গণমাধ্যমও এ বিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
আদালতের কাছে দেওয়া বিবৃতিতে প্রসিকিউটর ব্র্যাকলিন কেরি মামলাটি অন্যান্য সাধারণ মালার ঘটনার মতোই উপস্থাপন করেছেন। সাহৌরি ও রোবনেট ঘটনাস্থলে আইন অমান্য করেছেন কিনা তার ব্যাখ্যা করেছেন। তবে সে সময় ঘটনাস্থলে যে সাহৌরি সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন এবং সাংবাদিকরা তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তিনি তা উল্লেখ করেননি।
তিনি বিচারককে বলেন যে, লোকেরা অন্য কোনও বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করবে। সেদিকেও নজর রাখা আপনার কাজ।
তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি নিকোলাস এ ক্লিনফেল্ড আদালতে যুক্তি দেখিয়েছেন, সাহৌরি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরেও তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সাংবাদিক হিসেবে চিহ্নিত করার পরেও তার দিকে পিপার স্প্রে ছিটিয়েছিল তারা।
ক্লিনফেল্ড আদালতের কাছে পেশ করা বিবৃতিতে আরও বলেন, এই মামলাটি এমন একজন প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে, যিনি তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন আর সেই সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অযৌক্তি কারণ দেখিয়ে তাকে প্রথমে আক্রমণ করা হয়েছে এবং পরে নিষ্ঠুর কায়দায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।