চলতি মাসেই হলি আর্টিজান হামলা মামলার নিষ্পত্তি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ১, ২০২৩, ০৫:১৯ পিএম

চলতি মাসেই হলি আর্টিজান হামলা মামলার নিষ্পত্তি

ফাইল ছবি

সাত বছর কেটে গেল গুলশানে হোলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে সেই বেকারিতে ঢুকে অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে কুপিয়ে ও গুলি করে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে যাদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় ও তিনজন বাংলাদেশি। সেই রাতে জিম্মিদের মুক্ত করতে শুরুতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন।

হামলার ৩ দিন পর ৪ জুলাই গুলশান থানায় মামলা হয়। নিহত ৫ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক রিপন কুমার দাস। এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরকে। ২০১৮ সালের ১ জুলাই নব্য জেএমবিসহ ২১ জনকে অভিযুক্ত করে জীবিত ৮ জনের জন্য বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।

জীবিত ৮ আসামির মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। আসামিদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশীদ পলাতক ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালত চার্জ গঠন করার পর মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এরপর ৫২ কার্যদিবসে সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।

নব্য জেএমবি নেতা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী হাদিসুর রহমান সাগর, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‍্যাশ, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান মাহফুজ, মামুনুর রশিদ ও শরিফুল ইসলাম।

২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর বাদী এসআই রিপন কুমার দাসের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রায় ১ বছর পর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরার মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। ৩০ অক্টোবর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও পরবর্তী ৫টি তারিখে যুক্তিতর্ক গ্রহণের মাধ্যমে মামলাটি রায়ের জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময় চার্জশিটের ২১১ সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

হলি আর্টিজান বেকারিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলার রায়ে ৭ আসামির ফাঁসির নির্দেশ দেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। চার্জশিটভুক্ত ৮ আসামির মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

রায় ঘোষণার পর আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আপিল করে। অন্যদিকে খালাস পাওয়া একজনের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। বর্তমানে উচ্চ আদালতে এই মামলার আসামিপক্ষের জেরা চলছে।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর দীর্ঘ দিন উচ্চ আদালতে আটকে থাকা এ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের শুনানি শিগগিরই নিষ্পত্তি হতে পারে এমনটি জানিয়েছেন হাইকোর্টে এ মামলা পরিচালনাকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, একজন বিচারক হজে গিয়েছেন, তিনি ফিরে আসলেই দুই বা তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে।

উচ্চ আদালতে এই ৭ জঙ্গির ফাঁসির রায় বহাল থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ আইন কর্মকর্তা। 

Link copied!