নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে হৃদয় ভূঁইয়া (২৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। একই সময় পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। এতে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. হৃদয় দুধঘাটা গ্রামের আমির ভূঁইয়ার ছেলে ও আহত মো. ফারুক একই গ্রামের কামাল ভূঁইয়ার ছেলে।
এর আগে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি উপনির্বাচনে দুধঘাটা ভোট কেন্দ্রে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মো. কায়সার আহম্মেদ রাজু লোকজন ও তার সমর্থকরা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশসহ গাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
এ সময় ব্যালট বাক্স, পুলিশ ও আনসার সদস্য এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের জীবন রক্ষার্থে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এতে পুলিশের গুলিতে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মো. কায়সার আহম্মেদ রাজুর (তালা প্রতীকের) কর্মী মো. হৃদয় (২৪) ও মো. ফারুক (৩৫) নামে দুজন গুরুতর আহত হন।
পরে এলাকাবাসী আহতের উদ্ধার করে সোনারগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. হৃদয়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। একই সময় গুরুতর আহত মো. ফারুককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর ও এলাকাবাসীরা জানান, প্রায় ৬-৭ মাস আগে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার মজিবুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যু হলে পদটি শূন্য ঘোষণা করে দেন নির্বাচন কর্মকর্তা। পরে আজ শনিবার উপনির্বাচনে বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী আব্দুল আজিজ সরকার (মোরগ প্রতীক) ও পরাজিত প্রার্থী মো. কায়সার আহম্মেদ রাজু (তালা প্রতীক) ভোটে নির্বাচন করেন। ভোট শেষে সন্ধ্যা সাতটার দিকে গণনা শেষ হয়। এ সময় ভোট কেন্দ্র থেকে বের হয়ে পরাজিত প্রার্থী মো. কায়সার আহম্মেদ রাজু লোকজন ও তার সমর্থকরা প্রথমে বিজয়ী প্রার্থী আজিজের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে করে উভয় দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে পুলিশের পাহারায় প্রিসাইডিং অফিসার ও নির্বাচন কর্মকর্তারা ব্যালট বক্স গাড়িতে তুলে উপজেলা কার্যালয়ে ফিরে আসার সময় পরাজিত প্রার্থীর লোকজন তাদের ওপর দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইট-পাটকেল ছোড়ে এবং গাড়ি ভাঙচুর করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাদের জানমাল রক্ষার্থে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করলে হৃদয় নিহত ও মো. ফারুক গুরুতর আহত হন।