জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে সন্তানদের ভরণ-পোষণ না দেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১, ২০২৩, ০৩:১৫ এএম

জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে সন্তানদের ভরণ-পোষণ না দেয়ার অভিযোগ

স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে-মেয়ের ভরণ-পোষণ বন্ধ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জামালপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মোস্তফা আল মাহমুদের বিরুদ্ধে।

শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মোস্তফা আল মামুদের প্রথম  স্ত্রী নুজহাতুন নেছা। এ সময় তার সাথে ছিলেন মেয়ে এলএলবি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী বুশরা মুবাশেরা মাহমুদ।

লিখিত বক্তব্যে নুজহাতুন নেছা বলেন, দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর সংসার করার পর ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ২৩ ও ২০ বছরের দুটি সন্তান রেখে ২০২১ এর মার্চ মাসে এক নোটিশে আমাকে তালাক দেন। যা ছিল আমার ও সন্তানদের জন্য একটি ভয়াবহ যন্ত্রণার ঘটনা। এর কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি জিনাত আরা নামে একজনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। বন্ধ করে দেন আমার সন্তানদের ভরণ-পোষণের খরচ।

তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালের ৬ আগস্ট পরিবারিকভাবে মোস্তফার সাথে তার বিয়ে হয়। এরপরই তাদের ঘরে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় পারিবারিক নির্যাতন। ২০০৩ সালে ছেলে সন্তানের মা হন নুজহাত। এর ৬ মাসের মাথায় মোস্তফা হঠাৎ চায়না চলে যান। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা দুই সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ২০০৪ সালে খবর পান তার আমার স্বামী চায়নায় বিয়ে করতে যাচ্ছে। নিজের গয়না বিক্রি করে সন্তানদের নিয়ে চায়না গিয়ে স্বামীর সাথে থাকার ব্যবস্থা করেন নুজহাতুন নেছা।

তিনি আরও বলেন, সেখানে স্বামীর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে স্ত্রী সন্তানদের চায়না ফেলে দেশে চলে আসেন মোস্তফা। সেখানকার কয়েকজন বাংলাদেশিদের আর্থিক সহায়তায় বেচে থাকি।

এক পর্যায়ে সেকেন্ড হোমের কথা বলে মোস্তফা তাদের মালয়েশিয়া নেয়া যায়। সেখানে বসবাসতো দূরের কথা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনই ছিল মোস্তফার প্রধান কাজ। মোস্তফার মারধরে গুরুতর আহত হয়ে সেখানে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন। আবারও তাদের মালয়েশিয়ায় ফেলে দেশে চাচাত বোনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। বাধ্য সন্তানদের নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন নুজহাত। 

এই অবস্থায় মোস্তফা তিনি ২০১৮ সালে এমপি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তখন তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য কয়েকটি জায়গা অভিযোগ দেয়া হয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান মোস্তফা। স্ত্রী সন্তানদের খোঁজ নেয়া একেবারেই বন্ধ করে দেন মোস্তফা। 

এক পর্যায়ে জিনাত আরা নামে এক নারীর সাথে সম্পর্ক হয় তার। অবশেষে ২০২১ এর মার্চ মাসে এক নোটিশে আমাকে তালাক দেন। ছেলে ওমর ফারুক চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। চরম আর্থিক সংকটে পড়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছি আমরা।

তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানদের খোঁজ রাখেন না, তাদের নির্যাতন করেন, তিনি কিভাবে জনগণের সেবক হবেন। তিনি পোষাকের মত নারী ও রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করেন। তাই মোস্তফা আল মাহমুদের দৃষ্টান্তমুলক বিচারে জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। একই সাথে মনোনয়ন না দিয়ে দল থেকে বহিস্কারের জন্য জাতীয় পার্টির প্রধান রওশন এরশাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে জানতে মোস্তফা আল মাহমুদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।

Link copied!