ওজন কমানোর অন্যতম উপায় হিসেবে খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়ামকে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ থেকে শরীরচর্চা সব দিকেই খেয়াল রাখতে হয়। তবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও যে শরীর থেকে ওজন ঝরে ফেলানো সম্ভব তা হয়তো অনেকেই জানে না।
হ্যা, সত্যিই সিত্যই ঘুমের মধ্যেও ওজন কমানো সম্ভব। ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ তাদের মতো কাজ চালিয়ে যায়। এ কারণে কিছু ক্যালোরিও খরচ হয়। শরীরের এনার্জি খরচ হয়। তা ছাড়াও সারা রাত জুড়ে আপনার শরীরে বাড়তি পানি শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ঘামের মধ্যে দিয়ে খরচ হয়। তাই ‘ওয়াটার ওয়েট’ ঝরে যায়। সেই কারণেই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি ওজন মাপেন, তা হলে খানিকটা কম দেখাবে আপনার ওজন।
কী ভাবে সম্ভব
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনার শরীরে মানসিক চাপের হরমোন বেড়ে যায়। বেশি মাত্রায় হরমন বা কর্টিসল শরীরে থাকলে তা হজমশক্তির উপর প্রভাব ফেলে। শরীরের বিপাক হারও কমে যায় এই সব কারণে। ঘুম কম হলে শরীরের ক্ষুধাপ্রক্রিয়ায় অন্য ভাবে কাজ করে। তাই রাত জেগে থাকলে উল্টোপাল্টা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে। তাই ওজন বাড়তেও বেশি সময় লাগে না।
ঘুমের মধ্যেও কী করে ক্যালোরি ঝরাবেন
১. যারা সন্ধ্যাবেলা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা রাতে কম ওঠা-নামা করে বলে দেখা গিয়েছে। তাই আপনি যদি ওয়েট ট্রেনিং করেন, তা হলে তা সকালের বদলে সন্ধেবেলা করতে পারেন। শরীরের বিপাক হার শরীরচর্চার পর ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বেশি থাকবে। তাই ঘুমের মধ্যেও শরীরে ক্যালোরি বেশি খরচ হবে।
২. ক্যাসেইন প্রোটিন এক ধরনের দুগ্ধজাত প্রোটিন, যা হজম হতে অনেকটা সময় নেয়। তাই রাতে যদি এই ধরনের কোনও প্রোটিন শেক খেতে পারেন, তা হলে সারা রাত ধরে আপনার হজম প্রক্রিয়া সচল থাকবে। ক্যালোরিও ঝরবে।
৩. শরীরচর্চা করার পর যদি ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারেন, তা হলে শরীরে থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমাদের শরীরে ব্রাউন ফ্যাটের পরিমাণে খুব কম থাকে। কিন্তু এটি সক্রিয় থাকলে শরীরের বিপাক হার বেড়ে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত ক্যালোরি ঝরতে পারে। ৩০ সেকেন্ড যদি বরফ-ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারেন, তা হলে শরীরের ব্রাউন ফ্যাট সক্রিয় হয়ে ঘুমের মধ্যেও ৪০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরাতে পারে।
৪. গ্রিন টি শরীরের বিপাক হার বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে যদি ৩ কাপ চা খান, তার মধ্যে শেষ কাপটি ঘুমের আগে— তা হলে ঘুমের মধ্যে ৩.৫ শতাংশ বেশি ক্যালোরি ঝরতে পারে।
৫. ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন কি? যেই খাদ্যাভ্যাসে দিনে ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে বাকি ৮ ঘণ্টা খাওয়া যায়। এতে জমিয়ে রাখা সব সুগার শেষ হয়ে গিয়ে ফ্যাট ঝরিয়ে এনার্জি পায় শরীর। তাই ঘুমের মধ্যেও অনেকটা ক্যালোরি ঝরে।
সূত্র: আনন্দবাজার