ভারতের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায়, করোনাকালে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি শিশু চোখের সমস্যা নিয়ে হাজির হচ্ছে চিকিৎসকের কাছে। সব মিলিয়ে গত দু’বছরে দেশটিতে চোখের সমস্যায় ভোগা শিশুদের সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি দেশটির চেন্নাইয়ের এক চক্ষুহাসপাতালের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত দু’বছরে বিপুল পরিমাণে বেড়েছে শিশুদের চোখের সমস্যা। বহু বাবা-মা সন্তানদের শান্ত রাখতে বা ব্যস্ত রাখতে হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেন। তার সঙ্গে করোনাকালে যুক্ত হয়েছে অনলাইন ক্লাস। ফলে শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। সেই মোবাইলই চোখের সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ। এমনই বলছেন চিকিৎসকরা।
শিশুদের মায়োপিয়া রোগ
দীর্ঘ ক্ষণ মোবাইল নিয়ে সময় কাটানোর ফলে শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়ার পরিমাণ বাড়ছে। এই সমস্যায় যারা আক্রান্ত হন, তারা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকা সব কিছু ঝাপসা দেখেন। শিশুদের এই সমস্যা বাড়ছে।
অতিরিক্ত সময় মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকার ফলে চোখে ব্যাপক চাপ পড়ছে। তার সঙ্গে রোদের সংস্পর্শে না আসা, খেলাধূলার পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে চোখ অপুষ্টিতেও ভুগছে। সব মিলিয়ে ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের চোখের।
কোন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক থাকতে হবে?
অনেক সময় পরিবারে কারও চোখের সমস্যা থাকলে, তা বাচ্চার মধ্যেও সঞ্চারিত হতে পারে। এরকম আশঙ্কা থাকলে বাচ্চাকে অবশ্যই চক্ষুবিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। আবার ‘প্রিম্যাচিওর বেবি’-র ক্ষেত্রে চোখের সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই তাদের ব্যাপারে অধিক সচেতনতা জরুরি।
কোন ধরনের সমস্যা হলে বুঝবেন চোখ দেখাতেই হবে?
দীর্ঘ ক্ষণ ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে পড়াশোনা করলে অনেক সময় চোখ লাল হয়ে যায় কিংবা চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তে থাকে। সে ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে। অনেক সময়ই বাচ্চা দূরের জিনিস দেখতে পায় না। কিন্তু ওরা সেটা সম্পর্কে সচেতন নয়। তাই বাচ্চার দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধে হচ্ছে কি না জানতে চান। অসুবিধে দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। বাচ্চার যদি খুব ঘন ঘন মাথা ব্যথা হয়, সেটিও কিন্তু চোখ খারাপের উপসর্গ হতে পারে। সেই রকম সমস্যা হলেও চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখানো দরকার।