চলছে শীতকাল,আর শীতকাল মানেই প্রকৃতির শুষ্ক হয়ে ওঠা। শীতকালে বিশেষ করে ত্বক ও চুল রুক্ষ হয়ে যায়, তাই শীতে ত্বক-চুলের পরিচর্যা নেওয়া প্রয়োজন। প্রকৃতির এই শুষ্কতার পাশাপাশি এ সময়ে চুল হয়ে ওঠে শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল। আর এই শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল চুলের জন্য এসময়ে দরকার বাড়তি যত্ন।
কিভাবে সঠিক যত্নের মাধ্যমে আমরা শীতকালেও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারবো তা জেনে নিন আপনিও...
তেল লাগান : এটি চুলের যত্নের একটি প্রাচীন পদ্ধতি। সপ্তাহে ২-১ বার চুলে তেল লাগালে এতে চুল রুক্ষ হওয়া থেকে বাঁচে এবং উজ্জ্বল হয়। তবে তেল দিয়ে অনেকটা সময় রেখে দেওয়া উচিত নয়। এতে চুল সহজে ময়লা ও চিটচিটে হয়ে যায়। রাতে ঘুমানোর আগে গরম তেলের ম্যাসেজ করে সকালে বাইরে যাওয়ার আগে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। গরম তেল ম্যাসাজ করে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা তোয়াল মাথায় জড়িয়ে রাখতে পারেন। এতে চুলের গোড়া হবে শক্ত ও মজবুত।
ভালো করে চুল আঁচড়ান : চুল নিয়মিত আঁচড়ালে মাথার রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এতে করে চুল ও চুলের গোড়া সুস্থ থাকে। তাছাড়া শীতকালে চুলের শুষ্কতা বেড়ে যাওয়ায় সহজেই চুলে জট বেঁধে যায়। চুল ভালো করে আঁচড়ালে এই সমস্যা থাকবে না।
ভিনেগার দিয়ে চুল ধুয়ে দিন : ভিনেগার চুলের রুক্ষতা দূর করতে খুবই কার্যকরী। এটি চুলে কন্ডিশনারের মতো কাজ করে। এক মগ পানির সাথে ২ চামচ ভিনেগার মিশিয়ে রেখে শ্যাম্পু করার পর এই ভিনেগার মেশানো পানি মাথায় ঢাললে এতে চুল হবে মসৃণ ও উজ্জ্বল।
চুলে গরম পানি দেবেন না : আবহাওয়া যাই হোক না কেন চুলে কখনোই গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে চুলের গোড়া নরম হয় ও চুলের নানা ক্ষতি হয়। তাই চুলে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে।
অ্যালোভেরা জেল ম্যাসাজ : চুলের যত্নে অ্যালোভেরার ভূমিকা জাদুকরী। শ্যাম্পু করার আগে অ্যালোভেরার জেল দিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ রাখলে চুলের রুক্ষভাব চলে গিয়ে ময়েশ্চারাইজড হয়।
চুলের যত্নে মাস্ক : চুলের যত্নে শীতকালে কিছু মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। চুল পড়া রোধে নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েলের সাথে ভিটামিন সি ক্যাপসুল ও ডিমের কুসুম মিশিয়ে মাথায় লাগালে চুলের উপকার হয়। আবার চুলে মসৃণ ও চকচকে ভাব আনার জন্য মধু, টকদই ও ডিমের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
রুক্ষতা দূর করতে মধু : মধু ঘরোয়া টোটকায় খুবই উপকারী একটি উপাদান। চুল নিঃষ্প্রাণ হয়ে গেলে চুলের গোড়ায় মধু দিয়ে, একটি তোয়াল গরম পানিতে ভিজিয়ে মাথায় বেঁধে কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে নিলে চুলের রুক্ষতা কমে চুল হয় মসৃণ ও সুন্দর হয়।
চুল ফাটলে করণীয় : শীতকালে অনেকের চুলের আগা ফেটে যায়। চুলের আগা ফেটে যাওয়া অংশ কেটে ফেলে দেওয়াই ভালো। এতে চুলের বৃদ্ধি হয় দ্রুত।
চুল ঢেকে রাখুন : শীতের রুক্ষ আবহাওয়া ও কুয়াশার হাত থেকে চুলকে বাঁচাতে চুল ঢেকে রাখাই ভালো। তাছাড়া শীতকালে বাতাসে ধুলোবালি বেশি থাকে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় চুলে পাতলা কাপড় বা মাফলার জড়িয়ে বের হলে চুল ভালো থাকবে।
এই শীতে যাদের নরমাল চুল তারা সপ্তাহে ৩ বার চুল ধুতে পারেন। যাদের রুক্ষ চুল তারা দু’দিন পরে একবার করে চুল ধুলে ভাল। আবার যাদের তেলতেলে চুল তারা অবস্থা বুঝে ২ দিন বা ১ দিন পর পরও চুল ধুতে পারেন। চুলে শ্যাম্পু করা না গেলেও জল দিয়ে যাতে স্ক্যাল্প ভাল মত পরিষ্কার করা যায় সেদিকে নজর রাখুন।