পেটের অতিরিক্ত চর্বি সমস্যায় ভোগেন অনেকে। যাকে বলে ফ্যাটি লিভার। এই ফ্যাটি লিভারের কারণে অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। তাই পেটের অতিরিক্ত চর্বি থাকলে তা অবশ্যই কমিয়ে ফেলতে হবে।
কখনো কখনো যকৃতে শুধু চর্বি জমে থাকে, কিন্তু কোনো প্রদাহ থাকে না। একে বলে সাধারণ ফ্যাটি লিভার বা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। পরে একপর্যায়ে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, তখন একে বলা হয় স্টিয়ো-হেপাটাইটিস। এ পর্যায়ে যকৃতের কোষগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে।
একপর্যায়ে এখানকার সুশৃঙ্খল কোষ কাঠামো ভেঙে এবড়োখেবড়ো আকার ধারণ করে। ফাইব্রাস টিস্যু বা শক্ত কোষের আধিক্য বেড়ে যায়। এটাকে বলা হয় ফাইব্রোসিস। পরে এটি মোড় নেয় লিভার সিরোসিসের দিকে।
যেভাবে বুঝবেন ফ্যাটি লিভার হচ্ছে-
১. অনেক সময় অজান্তেই লিভারের কাজ করার ক্ষমতা কিছুটা ব্যাহত হয়। কখনও কখনও বিলিরুবিন বেড়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিলিরুবিন বেড়ে গেলে অথবা বছরে একবার নিয়ম করে চেকআপ করার সময় লিভার এনজাইম দেখে নিলে ভালো হয়।
২. ফ্যাটি লিভারের সব থেকে বড় লক্ষণ স্বাভাবিকের থেকে বেশি কোমরের মাপ বা মোদ্দা কথা ভুঁড়ি।
৩. লিভারে চর্বি জমলে স্বাভাবিক কাজ কিছুটা ব্যহত হয়। খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়, খাবারে অরুচি হয়, দ্রুত ওজন কমা, বমি বমি ভাব, বমিও হওয়া, খুব দুর্বল লাগা ও কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করে না।
৪. ফ্যাটি লিভার হলে মাথাব্যথা, মন খারাপ ও ডিপ্রেশন, আচমকা কাঁপুনিসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়।
৫. নখ বা চোখ হলদেটে লাগলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে লিভার ফাংশন টেস্ট করিয়ে নিতে হবে।
৬. হজমের সমস্যা ও অ্যাসিডিটি সমস্যা হতে পারে।
৭. অপরিমিত মদ্যপান করলে লিভারের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া টিবির ওষুধ, হরমোন ওষুধ, কিছু ব্যথার ওষুধসহ কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিকে লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে।
প্রতিরোধ
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে নজর দিতে হবে। মেদ ঝরাতে হবে। অত্যধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় স্থান দিতে হবে বেশি করে।
৩. অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে।
৪. অকারণে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হারবাল ওষুধের ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে।
৫. নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি।