এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ১১:৩০ এএম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচনি ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়।’
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির নেতাদের ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে, বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি বরাবরের মতো নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সেই কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’
বিএনপি নির্বাচনবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয়- সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতারা যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে- সেজন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। আমরা বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিলে বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি। এর আগে ‘১৩, ‘১৪ ও ‘১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি সারা দেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে।’
সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস-সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে- সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেবে।’
বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষার অপচেষ্টা করছে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন।’
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন, ‘বিএনপি নেতারা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার-বর্হিভূত বক্তব্য দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম।’