বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারি। এ উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নূর মোহাম্মদ নগরে এদিন সকালে কোরআনখানি, শোভাযাত্রা, স্মৃতিস্তম্ভে গার্ড অব অনার প্রদান ও পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ আমানত শেখ ও মা জেন্নাতুন্নেছা, মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান তিনি। সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন নূর। তার দুই স্ত্রীর কেউই আজ বেঁচে নেই। বর্তমানে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে তার। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন তিনি।
নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ’ (বিজিবি)। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পরে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন তিনি। ল্যান্স নায়েকে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এস এ মঞ্জুর। নূর মোহাম্মদ যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নের্তৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ শত্রুমুক্ত করেন।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে বীরত্বপূর্ণ সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এদিন পাকবাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলেও হাতে এলএমজি এবং আহত নান্নুকে কাঁধে নিয়ে শত্রু পক্ষের দিকে গুলি ছুঁড়তে থাকেন নূর মোহাম্মদ। হঠাৎ পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে তার হাঁটু ভেঙ্গে যায়। তবুও গুলি চালাতে থাকেন তিনি। এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নূর মোহাম্মদ শেখ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি।
সূত্র: বাসস