শূকরের কিডনি এখন থেকে ব্যবহার করা যাবে মানুষের দেহে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৭, ২০২৩, ০৬:১২ পিএম

শূকরের কিডনি এখন থেকে ব্যবহার করা যাবে মানুষের দেহে

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর কিডনির বিভিন্ন রোগে কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। ডোনার না পাওয়ার কারণে অনেকে অকালে মৃত্যুবরণ করেন। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর ৮৮ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। 

অনেক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এবার তারা মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয় নিয়ে গবেষণার সফলতার কথা বলেন। ডোনার না পাওয়ার কারণে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকা মানুষগুলো এবার দেখতে পাবেন আশার আলো।

মানুষের দেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের আগে জিনগত অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সেই প্রতিস্থাপিত কিডনি মানুষের দেহে ৩২ দিনেরও বেশি সময় স্বাভাবিক কিডনির মতো সক্রিয়। আরও এক মাস কিডনির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পর বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে আবারও তথ্য প্রকাশ করবেন। গবেষকেরা বলছেন, কিডনি দুষ্প্রাপ্যতা কমাতে এই গবেষণা মানবজাতিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তির দেহে কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল তাঁর শরীর সচল থাকলেও মস্তিষ্ক সচল নেই। এই গবেষণা আন্তঃপ্রজাতি অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং এই ক্ষেত্রে গবেষণা সফল হলে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মানুষের প্রাণ বেঁচে যাবে।

শূকরের কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন সম্ভব হলে প্রতিবছর ডোনার না পাওয়ার কারণে যে মানুষগুলো মারা যান তাঁরা হয়তো বাঁচার নতুন আশা পাবেন। কারণ বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর কিডনির বিভিন্ন রোগে কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর ৮৮ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন হয়।

এ গবেষণার বিষয়ে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাঙ্গন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক রবার্ট মন্টেগোমারি বলেন, ‘আমরা শূকরের কিডনিতে কিছু জিনগত পরিবর্তন এনে তা মানুষের দেহে প্রতিস্থাপন করে দেখেছি যে তা মানুষের দেহে এক মাসেরও বেশি সময় সক্রিয় থাকে।’ 

তিনি আরও বলেন, মন্টেগোমারি এবং তাঁর দল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো শূকরের কিডনিতে জিনগত পরিবর্তন আনেন। পরে সেই সময়ই তাঁরা মানুষের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেখেন। পরে সেই বছরেরই নভেম্বর মাসে আরও একজনের দেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেন তাঁরা। প্রাথমিক সেই দুই গবেষণায় তাঁরা দেখেছিলেন, সেই কিডনিগুলো দুই থেকে তিন দিন সক্রিয় ছিল।

এদিকে, মানুষের শরীরে কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পড়ার পেছনে দায়ী সাইটোমেগালো ভাইরাসের কোনো উপস্থিতি ছিল না সেই কিডনিতে। তাই বিজ্ঞানীরা আরও এক মাস সেই ব্যক্তির দেহে কিডনি কাজ করে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Link copied!