আরিয়ানের ভাগ্যে কী আছে জানা যাবে বুধবার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২৭, ২০২১, ০৬:৪১ এএম

আরিয়ানের ভাগ্যে কী আছে জানা যাবে বুধবার

এখনো জামিন মেলেনি বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানের। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) জামিন আবেদনের ‍শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত রাখেন আদালত। পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত বুধবার (২৭ অক্টোবর)।

বম্বে হাইকোর্টে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) প্রায় ৫০ মিনিট ধরে আরিয়ান খানের জামিন আবেদনের শুনানি চলে। পরে বিচারক নিতিন সাম্বর বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ফের আরিয়ানের মামলার শুনানি হবে বলে ঘোষণা করেন। ইতোমধ্যেই ১৮ দিন জেল হেফাজতে কাটিয়েছেন আরিয়ান খান।

মঙ্গলবার আরিয়ানের জামিনের বিরোধিতা করে এনসিবি বম্বে হাইকোর্টকে জানায়, আরিয়ান খানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। কেবল মাদকদ্রব্য সেবনই নয়, তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য কেনাবেচারও অভিযোগ এনেছে এনসিবি। আরিয়ান জামিন পেলে সে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে। এর আগে, গত রবিবারই (২৪ অক্টোবর) মাদক মামলার সাক্ষী তার বক্তব্য পরিবর্তন করেছে। এনসিবির তরফ থেকে দাবি করা হয় যে আরিয়ান তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। তথ্য চুরিরও আশংকা প্রকাশ করেছে এনসিবি। শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানির বিরুদ্ধেও সাক্ষীকে প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছে এনসিবি।

আরিয়ানের আইনজীবী প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি আরিয়ানের সপক্ষে বলেন, ইভেন্ট ম্যানেজার প্রতীক গাবার আমন্ত্রণে মাদক পার্টিতে গিয়েছিলেন আরিয়ান। একটি বিজ্ঞাপনের কারণে ২ অক্টোবর প্রতীকের অনুরোধে ওই পার্টিতে যান আরিয়ান ও আরবাজ। পার্টি শুরু করার আগেই আটক করা হয় তাদের। সেদিন আরিয়ানের কাছ থেকে কোনও রকমের মাদক পায়নি এনসিবি। তাই আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করার কোনও কারণই ছিল না এনসিবির কাছে। তা সত্ত্বেও ৩ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয় আরিয়ানকে। মাদক নয়, শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে এনসিবি।

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে কোথাও মাদকপার্টির উল্লেখ নেই, এমনকি মোবাইল চ্যাটের সঙ্গে মাদক পার্টির কোনও সম্পর্কও নেই। যেসব হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা বলা হচ্ছে তা ২০১৮ এবং ২০১৯-এর। আমি কোনও এনসিবি অফিসারের বিরোধিতা করছি না। এমনকি তাদের সাক্ষী প্রভাকর সৈল বা কেপি গোসাভিকে নিয়েও চিন্তিত নই। এমনকি আমার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক নেতারও সম্পর্ক নেই। আরিয়ান মাদক পার্টিতে গিয়েছিল, কিন্তু সে কিছুই করেনি অথচ তাকে গ্রেপ্তার করা হল। ওই পার্টিতে অনেকেই উপস্থিত ছিল, তাদের থেকে প্রাপ্ত মাদক অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি তাদের এক বছরের জেল হতে পারে। তাদের নেশামুক্তি কেন্দ্র পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কোনও মামলাই হতে পারে না। এনসিবিরি দাবি অনুযায়ী অচিত ও আরবাজের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও মাদক পার্টিতে অচিত উপস্থিতই ছিল না। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাড়ি থেকে। অচিত ও আরিয়ান চ্যাটে শুধুমাত্র অনলাইন গেম নিয়ে আলোচনা করেছিল। এর থেকে বেশি কোনও বিষয়ে কথা বলেননি তারা।

এদিন সুপ্রিম কোর্টের কেস ‘রাগিনী দ্বিবেদী ভার্সেস স্টেট অফ কর্নাটকে’র উদাহরণ দিয়ে মুকুল রোহাতগি বলেন, সেই কেসেও অভিযুক্তের থেকে কিছু মাদক পাওয়া যায়নি। আরিয়ানের মতোই শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে। তাই সুপ্রিম কোর্ট তাকে জামিন দিয়েছিল। এছাড়াও বম্বে হাইকোর্টেরই একটি মামলার উদাহরণ দেন তিনি। শাহরুখ খানের ছেলে হওয়ার কারণেই এই মামলা নিয়ে উৎসাহিত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মিডিয়া। রাজনৈতিক নেতা ও এনসিবি আধিকারিকদের সমস্যার প্রভাব আরিয়ানের মামলায় পড়া অনুচিত বলে দাবি করেন তার আইনজীবী। জামিনের আর্জি জানিয়ে এদিন বক্তব্য শেষ করেন মুকুল রোহাতগি।

গত ২ অক্টোবর মাদকপার্টি থেকে আটক করা হয়েছিল আরিয়ানকে। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর পরদিন এনসিবি গ্রেপ্তার করে তাকে। দু’দফায় জামিন খারিজের পর এনসিবি হেফাজত থেকে গত ৮ অক্টোবর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। তারপর থেকেই আর্থার রোড জেলে বন্দি আরিয়ান খান। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের পর মুম্বই সেশন কোর্টও খারিজ করে দেয় আরিয়ান খানের জামিনের আর্জি। এরপরই বম্বে হাইকোর্টে আরিয়ানের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অমিত দেশাই। বম্বে হাইকোর্টে সতীশ মানশিন্ডে বা অমিত দেশাই নয়, আরিয়ানের হয়ে সাওয়াল জবাব করছেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি। অন্যদিকে এনসিবির হয়ে সওয়াল জবাব করবেন এএসজি অনিল সিং। বিচারপতি নিতিন সাম্বরের সিঙ্গেল বেঞ্চের কাছে আজ দুই পক্ষই নিজেদের সমর্থনে বক্তব্য পেশ করবেন তিনি। তিনি কথা বলেছেন আরিয়ানের দুই আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে, অমিত দেশাইয়ের সঙ্গে।

Link copied!