পুতিন-লুকাশেঙ্কোর মৃত্যু কামনা করে ফেসবুকে লেখা যাবে!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১১, ২০২২, ১২:৪৩ পিএম

পুতিন-লুকাশেঙ্কোর মৃত্যু কামনা করে ফেসবুকে লেখা যাবে!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক পোস্ট দেওয়া নিষিদ্ধ হলেও সেই নিয়ম ভাঙছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা এখন কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিরোধের আহ্বান জানানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য তারা এটি করছে। এরকম খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। তাদের একটি অভ্যন্তরীণ ইমেইলের বরাতে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে লিখেছে, রাশিয়া, ইউক্রেইন ও পোল্যান্ডসহ আরো কয়েকটি দেশে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের জন্য ‘হেইট স্পিচ পলিসিতে’ এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। 

সেই সুযোগ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বেলরুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মৃত্যু কামনা করেও পোস্ট দিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে মেটার একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে আমরা কিছু রাজনৈতিক মত প্রকাশের সুযোগ দিচ্ছি যা হয়তো স্বাভাবিক সময়ে আমাদের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচারের নীতিমালার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়, যেমন ‘রাশিয়ায় আক্রমণকারীদের মৃত্যু হোক’- এ ধরনের বক্তব্য।

“আমরা এখনও রুশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতার আহ্বান ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ দেব না।” মেটার এ ধরনের পদক্ষেপেকে ‘চরমপন্থি কর্মকাণ্ড’ আখ্যায়িত করে তা থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

মেটার এক ইমেইল বার্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, রুশ বা বেলারুশের নেতাদের মৃত্যু কামনা করে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ ততক্ষণই থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সেখানে অন্য কাউকে ‘টার্গেট’ করা না হয়। আবার কেউ যদি তাদের মৃত্যু ঘটানোর জন্য কোনো স্থান বা উপায়ের বর্ণনা করতে যান, সেটাও মেটা প্রকাশ করতে দেবে না।

মেটার আরেক ইমেইলে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, এস্তোনিয়া, জর্জিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, ও ইউক্রেইনে মেটার নীতিতে এই সাময়িক পরিবর্তন প্রযোজ্য হবে।

সম্প্রতি মেটার মডারেটরদের উদ্দেশে এই ইমেইলগুলো পাঠানো হয়। মেটা কর্তৃপক্ষ এটাও জানিয়েছে, নীতিমালার পরিবর্তন শুধু সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে রুশ নাগরিক ও রুশ সেনাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

মেটার ইমেইলে বলা হয়েছে, “টি১ মাত্রার সহিংসতাপূর্ণ বক্তব্য অনুমোদন করার এই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে শুধু (ক) রুশ সেনাদের লক্ষ্য করে বলা হয়ে এমন ক্ষেত্রে, যুদ্ধবন্দিদের বাদ দিয়ে বা (খ) রুশ নাগরিকদের লক্ষ্য করে বলা হয়েছে যেখানে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটটি স্পষ্ট (যেমন, যে কনটেন্টে আত্মরক্ষা বা আগ্রাসনের উল্লেখ থাকবে)।

“আমরা এটা করছি একটি সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট আমরা পর্যকেক্ষণ করছি বলে, যেখানে রুশ সেনারা আসলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করছে। বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের নীতিমালায় রুশ নাগরিকদের প্রতি আক্রমণকে নিরুৎসাহিত করা অব্যাহত রয়েছে।”

গত সপ্তাহে রাশিয়ার সরকার সেদেশে ফেসবুক ও টুইটারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মূলত এসব প্ল্যাটফরমে রাশিয়ার গণমাধ্যমের প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানায় ক্রেমলিন।

অনেক গণমাধ্যমই এই সংঘাতের কনটেন্ট শেয়ার করার বিষয়ে নতুন বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে, যারমধ্যে ইউরোপে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল স্পুতনিক ও আরটির সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞাও অন্তর্ভুক্ত।

মেটার ইমেইলে জানানো হয়, তারা ইউক্রেইনের কট্টরপন্থি আযোভ ব্যাটালিয়নের প্রশংসার প্রচারও অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্বাভাবিক অবস্থায় যার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

Link copied!