রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট: ইউক্রেনে যেমন রয়েছেন বাংলাদেশিরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২, ১২:৪৩ এএম

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট: ইউক্রেনে যেমন রয়েছেন বাংলাদেশিরা

ইউক্রেনের খারকিভের বাসিন্দা খালেদা নাসরিন নীলিমা দেশটিতে রয়েছেন প্রায় ৩০ বছর ধরে। সোভিয়েত আমল থেকে শুরু করে ইউক্রেনের স্বাধীনতা, বর্তমান যুদ্ধাবস্থা-সবই তার চোখের সামনে ঘটেছে। কিন্তু এতদিন পর ইউক্রেনে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগতে শুরু করেছেন বাংলাদেশি এই চিকিৎসক।

''এতদিন ধরে যত্ন করে যে বাসা সাজিয়েছিলাম, এখন সেটা ছেড়ে যেতে হবে। আপাতত ওয়েস্টে, পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি এক বন্ধুর বাসায় গিয়ে কিছুদিন থাকবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেবো ইউক্রেনেই থাকবো, বাংলাদেশে যাবো নাকি অন্য কোথাও যাবো,''বলছিলেন ডা. খালেদা নাসরিন।

তিনি যে শহরে থাকেন, সেই খারকিভ থেকে রাশিয়ার সীমান্তের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। এটিও পূর্ব ইউক্রেনের একটি শহর। বিমান, ট্যাঙ্ক, ট্রাক্টর ইত্যাদি ভারী যানবাহন তৈরির জন্য এই শহরের পরিচিতি রয়েছে।

''খু্বই উদ্বেগে আছি, তাই অন্য শহরে চলে যাচ্ছি। আগামীকালই চলে যাবো। এই বাসায় বিশ বছর ধরে থাকি, একেবারেই যেতে ইচ্ছা করছে না। কিন্তু আমি এখানে থাকা এখন একেবারেই নিরাপদ বোধ করছি না,'' বলছিলেন ডা. নাসরিন।

দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে রাশিয়ার স্বীকৃতি দেয়ার পর যুদ্ধ ভীতির ছায়া পড়তে শুরু করেছে এই শহরের ওপরেও। খালেদা নাসরিন আশঙ্কা করছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের পুরাদস্তুর যুদ্ধ বেধে গেলে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরের ওপরে প্রথমদিকে তার প্রভাব পড়বে। তাই এর মধ্যেই শহরের অনেক বাসিন্দা শহর ছাড়তে শুরু করেছেন।

''শহরের অবস্থা থমথমে, মানুষজনের চলাফেরা অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে তরুণ বয়সীদের একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। গাড়িতে, পথে আগের মতো মানুষের দেখা মেলে না। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। দোকানপাট খোলা আছে, তবে খাবার, সবজির দাম এক সপ্তাহের মধ্যেই ২০/৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে,'' বলছেন তিনি।

ডাঃ নীলিমা জানান, শহরের অনেক বাসিন্দা গোপনে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তার সন্তান যে স্কুলে পড়ে, সেখানেও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অর্ধেকের নীচে নেমে এসেছে।

ইউক্রেনে আনুমানিক হিসাবে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "তারা পুরো ইউক্রেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং ইস্টার্ন ইউক্রেনের যেসব এলাকায় সমস্যা রয়েছে, সেখানেও অনেক বাংলাদেশি আছেন, স্টুডেন্ট আছেন।"

ইউক্রেনে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় পোল্যান্ড দূতাবাস থেকে সেখানকার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Link copied!