ইউপি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনরা শান্তি বিনষ্ট করছে, ২২ জনের প্রাণহানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ৩, ২০২১, ০৬:২১ পিএম

ইউপি নির্বাচন নিয়ে  ক্ষমতাসীনরা শান্তি বিনষ্ট করছে, ২২ জনের প্রাণহানি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'সরকারের লোকজন এখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নিজেরাই কামড়াকামড়ি, মারামারি করে মরছে আর গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের শান্তি বিনষ্ট করছে। জনগণের মধ্যে আতংক-অস্থিরতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। চলমান ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত সহিংসতা করছে। পত্র-পত্রিকার খবর অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ঢাকায় বসে টাকার বিনিময়ে প্রকাশ্যে মনোনয়ন বানিজ্য করছে আর প্রার্থীরা গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হচ্ছে।'

বুধবার (০৩ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আরো বলেন, 'এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে-লুটপাটের লোভ। কোনমতে দলীয় টিকেট পেলেই সিলেকশনের চেয়ারম্যান হয়ে যাবে। তখন হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়ার অভাব হবে না। সব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। মেরে কেটে যেভাবে হোক চেয়ারম্যান-মেম্বার হওয়ার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছে তারা। কোন কোন জায়গায় প্রার্থীরা নৌকায় ভোট না দিলে ভোটারদের এলাকা ছাড়া করার হুংকার দিচ্ছেন।'

বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আজ খবরের কাগজে দেখলাম, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম হুমকি দিয়েছেন, “যারা নৌকার বিরোধিতা করছে এবং নৌকায় ভোট দিবে না তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা মারা গেলে কবরস্থানে কবর দিতে দেয়া হবে না। এমনকি তাদের মসজিদেও নামাজ পড়তে দেয়া হবে না।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা তার আপন বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের খান পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় বেজায় মনক্ষুন্ন হয়েছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সেখানে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের পক্ষে প্রচারনায় তিনি মাঠে নেমেছেন, মাঠে নেমেছেন রাতে ভোট ডাকাতি করে দশমিনা-গলাচিপা আসনে নৌকার অটো এমপি সিইসির আপন ভাগ্নে এস এম শাহজাদা, সহোদর আবু তাহের খানসহ তাদের পুরো পরিবার।'

রুহুল কবির রিজভী বলেন,'আওয়ামী লীগের জোরালো সমর্থক কে এম নুরুল হুদা গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনার দায় নির্বাচন কমিশন নেবে না। দায় প্রশাসনের। খুনোখুনিতে তিনি নাকি বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। কে এম নুরুল হুদার অধীনে নির্বাচন কমিশনের স্বয়ংসম্পূর্ণ সঙ্গা পাল্টে গেছে। কমিশনের স্বাধীন সত্তাকে হরণ করেছেন কে এম নুরুল হুদা নিজেই।'

৭ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘোষণা

সংবাদ সম্মেলনে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির নেওয়া কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ওই দিন সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১১ টায় জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজারে বিএনপি’র পক্ষ থেকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ অঙ্গ ও  সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া। ৬ নভেম্বর বেলা ২ টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে, ইতোমধ্যে পোষ্টার প্রকাশ করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, দলের অঙ্গ, সহযোগী এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলিও নানা কর্মসূচি করবে। অনুরূপভাবে দেশব্যাপী জেলা, মহানগর ও উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে সুবিধানুযায়ী যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

Link copied!