ছাত্র রাজনীতির চাপে থেঁতলে গেল মেধাবীর মাথা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৩১, ২০২১, ০৫:০৭ পিএম

ছাত্র রাজনীতির চাপে থেঁতলে গেল মেধাবীর মাথা

এক মেধাবীর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে, ভেঙে গেছে মাথার খুলির হাড়। রক্তক্ষরণ হয়েছে মস্তিষ্কে। তাই অপারেশন করে মস্তিষ্কের কিছু অংশ তার শরীরের মধ্যে সংরক্ষণ রেখেছেন চিকিৎসকরা। মাথায় দেওয়া ব্যান্ডেজে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’।

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মেধাবী এই শিক্ষার্থীর নাম মাহাদি আকিব (২১)। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন। হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়ায় ভেঙে গেছে হাড়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে শনিবার (৩০ অক্টোবর) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হন মাহাদি। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ 

শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেইন গেটের পাশে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে মাহাদির ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাকে। হামলায় মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান মাহাদি। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা তাকে ফেলে চলে যায়। পরে সহপাঠীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মাহাদির অপারেশন শেষে চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল কাদের বলেন, ‘মাহাদির অস্ত্রোপচার হয়েছে। মাথার হাড় ও মস্তিষ্কে ইনজুরি আছে’

চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘তার মাথা থেঁতলানো ছিল, হাড় ভেঙে গেছে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এই অবস্থায় অপারেশন করে মাথার কিছু অংশ শরীরের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। আমরা সফল অপারেশন করেছি। আশা করি, মাহাদি সুস্থ হয়ে উঠবে’।

এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরকারী ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে মারামারি হয়। পরে অধ্যক্ষ উভয়পক্ষ থেকে ৪ জন করে ৮ জনকে তার কক্ষে ডাকেন। আমরা ওখানে যাই। আলাপ চলাকালেই ক্যাম্পাসের বাইরে এক পক্ষের জুনিয়ররা মাহাদির ওপর হামলা চালায়। পরে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মাহাদিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।  

তিনি আরও বলেন, ছুরি ও হকিস্টিক দিয়ে আঘাতের ফলে মাহাদির মাথায় আঘাত লেগেছে। তাই প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। শনিবার রাতেই তার অপারেশন হয়েছে। রোববার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে চেতনা ফিরেছে। তবে এখনও কথা বলার অবস্থা তৈরি হয়নি।  

ছাত্র রাজনীতির বলি হয়ে প্রাণ হারানোর তালিকাটা নেহায়েতই ছোট নয়। এর আগে ছাত্র রাজনীতির শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বুয়েটের শিক্ষার্থী সনি। তারপর একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী আবরার। আহত হওয়ার তালিকাও কম লম্বা নয়। গত শনিবারও (৩০ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছে সংঘর্ষ।

Link copied!