মুখোমুখি ঝর্ণা-মামুনুল: রিসোর্টে বারংবার ধর্ষণ, সাক্ষ্য দিলেন ঝর্ণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৫, ২০২১, ১২:০৮ এএম

মুখোমুখি ঝর্ণা-মামুনুল: রিসোর্টে বারংবার ধর্ষণ, সাক্ষ্য দিলেন ঝর্ণা

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তার কথিত স্ত্রী ও মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসানের আদালতে জান্নাত আরা ঝর্ণা ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনাসহ সাক্ষ্য দেন। আসামি মামুনুল হক এসময় উপস্থিত ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, “মামুনুল হকের আইনজীবীরা ৪১ বার  বাদী ঝর্ণাকে বলেছেন আপনি মামুনুল হকের স্ত্রী। এর জবাবে ঝর্ণা বেগম প্রতিবারই না বলেছেন।”  

ঝর্ণা বেগম সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বলেছেন, “স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় মামুনুল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। পরে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে মামুনুল তাকে নানা জায়গায় নিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেন।”

এছাড়া মামুনুল হক তাকে কোথায় কখন নিয়ে ধর্ষণ করেছেন তাও বলেছেন ঝর্ণা বেগম। ঝর্ণার জবানবন্দি শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবিরা তাকে জেরা করেন।      

এর আগে, গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে বুধবার সকালে মামুনুলকে আদালতে আনা হয়। এসময় মামুনুল হকের অনুসারীরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেয়।

চলতি বছরের গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে ঝর্ণা বেগমকে নিয়ে সময় কাটানোর সময় মামুনুল হক স্থানীয় জনগণের হাতে অবরুদ্ধ হন।মামুনুল হক ওইসময় ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তার নাম  আমিনা তায়্যেবা বলেন। পরে ওই কথিত স্ত্রীর প্রকৃত নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা বলে জানা যায়।

ঝর্ণার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কারাগার গ্রামে। ৩০ বছর বয়সী ঝর্ণা ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়ালিউর রহমান ওরফে ওলি মিয়ার মেয়ে।

প্রসঙ্গত, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে একনারীসহ অবরুদ্ধ হলে হেফাজতে ইসলাম’র স্থানীয় নেতাকর্মীরা ওই রিাসোর্টে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হেফাজতের নেতাকর্মীরা ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস, যুবলীগ ও  ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা চালায়। এক সাংবাদিককেও পিটিয়ে আহত করে তারা। এসব ঘটনায় মামুনুলের বিরুদ্ধে মোট ৬টি মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন রয়্যাল রিসোর্টে তার সঙ্গে অবরুদ্ধ হওয়া নারী জান্নাত আরা ঝর্ণা। ওই সময় মামুনুল হক ঝর্ণাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেছিলেন।

Link copied!