নারায়ণগঞ্জের লঞ্চ দূর্ঘটনায় ৬ জনের লাশ উদ্ধার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২০, ২০২২, ০৬:২৪ পিএম

নারায়ণগঞ্জের লঞ্চ দূর্ঘটনায় ৬ জনের লাশ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় ফের মুন্সিগঞ্জগামী এম এল আশরাফ উদ্দিন নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছে৷ রবিবার দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার আল-আমিন নগর এলাকায় নির্মানাধিন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর কাছাকাছি এই দূর্ঘটনা ঘটে৷ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পাচঁ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ ও দুইজন শিশু। লাশগুলো নদীর পূর্ব তীরে বন্দর উপজেলার মাহমুদনগর এলাকায় রাখা হয়েছে। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অধিকাংশ যাত্রী। তাদের সংখ্যা জানা যায় নি।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সাঁতরে তীরে উঠে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, দুপুর ১ টা ৫৮ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রায় অর্ধ শত যাত্রী নিয়ে মাঝারি আকারের লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি সদর উপজেলার সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে এম ভি রূপসী নামে বড় আকারের একটি পণ্যবাহি কার্গো পর পর কয়েকবার ধাক্কা দিলে লঞ্চটি নদীর মাঝখানে ডুবে যায়। এ সময় দশ বারপজন যাত্রী ন্দীতে লাফিয়ে পড়ে বেঁচে গেলেও অধিকাংশ যাত্রী নিখোঁজ হন। তাদের সন্ধানে নদীর দুই তীরে স্বজনরা এসে আহাজারি করতে থাকেন। ক্যেক হাজার নারী পুরুষ এখন নদীর দুই তীরে অবস্থান করছেন। এদিকে লঞ্চ ডুবির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। 

লঞ্চডুবির ঘটনা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুইজন নারী, দুইজন পুরুষ ও দুইজন শিশুর। নিখোঁজদের উদ্ধারে তল্লাশি অভিযান চলছে।  তবে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজের সংখ্যা কতো তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি৷ 

তদন্ত কমিটি গঠন

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, লঞ্চ ডুবির ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম ব্যাপারীকে প্রধান করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

লঞ্চ শনাক্ত

এদিকে, নদীতে পণ্যবাহী জাহাজ এমভি রূপসী-৯ এর ধাক্কায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চটি শনাক্ত করা হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। ডুবে যাওয়া লঞ্চটি শনাক্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ থেকে ২০ জন নিখোঁজ থাকতে পারে। তবে নিখোঁজদের পক্ষে কেউ এখনো তালিকায় নাম লেখায়নি। সকালের মধ্যে পুরো নিখোঁজদের তালিকা হয়ে যাবে।’

উদ্ধারকারি জাহাজ প্রত্যয়

এদিকে, লঞ্চডুবির ঘটনায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহাজটি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ জুলাই শীতলক্ষ্যা নদীর একই স্থানে এক কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে৷ এতে নারী ও শিশুসহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়৷

Link copied!