উন্মুক্ত লাইব্রেরি সামাজিক মূল্যবোধের বিশাল দিগন্ত খুলে দিবে: কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩, ০৩:৫২ এএম

উন্মুক্ত লাইব্রেরি সামাজিক মূল্যবোধের বিশাল দিগন্ত খুলে দিবে: কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

উন্মুক্ত লাইব্রেরি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের জায়গায় একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেইট সংলগ্ন উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে 'বই হোক মুক্তির স্লোগান’ এই প্রতিপাদ্যকে  সামনে রেখে দিনব্যাপী 'উন্মুক্ত লাইব্রেরী দিবস- ১৪২৯' উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

শোভাযাত্রা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, উন্মুক্ত লাইব্রেরির সাহিত্য পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন, কবিতা আবৃত্তি, প্রবন্ধ পাঠ, রম্যরচনা, নৃত্য, লোকগীতি, বাউল গান, আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণভাবে দিবসটি পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিনা হোসেন বলেন, “উন্মুক্ত লাইব্রেরি আমাদের সবার চেতনার জগৎকে আলোকিত করবে, সবার মাঝে উঠে আসবে নানা দিগন্ত রেখা। যে দিগন্ত রেখা ধরে আমাদের বাংলা ভাষা ও আমাদের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে পরিচিতি পাবে।“

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “একটি উদার, মানবিক ও ধর্মনিরেপক্ষ দেশ গঠনের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে যদি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মিলন ঘটাতে না পারি তাহলে যে অঙ্গীকার সামনে রেখে আমরা যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করি আমাদের যৌবন উৎসর্গ করি তা কখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।”

শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, “আমাদের শরীরের রোগ সারানোর আমরা যেমন হাসপাতালে ছুটাছুটি করি। আমাদের মনের রোগ সারানোর জন্য এমন উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রয়োজন প্রতিটি জায়গায়।”

মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, “এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক থেকে উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষ বই পড়ার মাধ্যমে আরো বেশি মানবিক হয়ে উঠবে। আমাদের সমাজ একটি সুস্থ, সুন্দর সমাজে পরিণত হবে৷”

দেশের কাঠামোগত উন্নয়নই শুধু উন্নয়ন না পাশাপাশি আমাদের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নও ঘটাতে হবে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন,  “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময় আমাদের চিন্তার উন্নয়নের কথা বলেন। উন্মুক্ত লাইব্রেরি চিন্তার উন্নয়ন ঘটানোর জন্যই একটি পদক্ষেপ। গ্রামে গ্রামে এরকম লাইব্রেরি স্থাপন করতে পারলেই আমাদের প্রকৃত মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়ন ঘটবে।”

প্রথম উন্মুক্ত লাইব্রেরি দিবস উপলক্ষে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য কুড়িগ্রামের জয়নাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে 'পলান সরকার সম্মাননা' প্রদান করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকতের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় এই ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি’।

Link copied!