মে ২৪, ২০২২, ০৫:৩৮ পিএম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটে ঢাকাকে যুক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। গতকাল সোমবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে দুইদিনব্যাপী কোয়াড সম্মেলনে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতেও এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
সম্প্রতি ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক কাঠামো (আইপিইএফ) নামে ওই জোটে বাংলাদেশের অন্তুর্ভূক্তি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ওয়াশিংটনে আসছে ২ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংলাপে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে বাইডেন প্রশাসন।
মূলত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের একচেটিয় বাণিজ্যপ্রভাব মোকাবিলায় ভারত, জাপানসহ প্রাথমিকভাবে ১২টি দেশকে যুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে আইপিইএ ‘র যাত্রার কথা ঘোষণা করা হয়।
জাপান সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল সোমবার টোকিওতে অনুষ্ঠিত কোয়াড কনফারেন্সে ওই জোটের আনুষ্ঠানিক পথচলার ঘোষণা দেন।
বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪০ শতাংশ আসা ওই ১২ দেশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রুনেই, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে ওই দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেছে।
টোকিওতে অনুষ্ঠিত কোয়াড সম্মেলন মঞ্চে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, অস্ট্রেলিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন, ২১ শতকের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন এই অর্থনৈতিক কাঠামোতে ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে উত্তরণ ও সরবরাহব্যবস্থাকে টেকসই করার ওপর জোর দেওয়া হবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, নতুন এই অর্থনৈতিক কাঠামো ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করবে। এই কাঠামো যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের জন্য একটি শক্তিশালী, সুষ্ঠু ও সহনশীল অর্থনীতির পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
নতুন এই অর্থনৈতিক জোটে বংলাদেশকে যুক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন আঞ্চলিক সহযোগি রাষ্ট্র। গত মার্চে ঢাকায় অংশীদারত্ব সংলাপের সময় থেকে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে আইপিইএফ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। পরে নিয়মিত বিরতিতে ঢাকা ও ওয়াশিংটনেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ওই বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, `ডিজিটাল অর্থনীতি, ক্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ও সাপ্লাই চেইনসহ আমরা ২১ শতকের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মতামত বিনিময়ের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এদিকে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বালেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোনো নিরাপত্তা জোটে বাংলাদেশ যুক্ত হতে আগ্রহী নয়। তবে সামাজিক-অর্থনৈতিক সহযোগিতায় খুবই আগ্রহী।