সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১, ১১:১৬ এএম
শান্তি ছাড়া কখনও কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশে শান্তি বজায় রেখে বর্তমান সরকার কাজ করছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনের বাগানে একটি গাছের চারা রোপন করার পর তিনি এ কথা বলেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে এসময় তিনি বাগানে একটি বেঞ্চও উৎসর্গ করেন। পরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান সরকারপ্রধান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতেমা, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গাছের চারা রোপনের পর বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি ও আদর্শের স্মতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি বিশেষ দিন। একটি চমৎকার জায়গায় একটা বেঞ্চ স্থাপন ও একটি বৃক্ষরোপন করা হলো। যার শতবর্ষের পর এ বৃক্ষটি টিকে থাকবে এবং শান্তির বারতা বয়ে বেড়াবে।
শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ও পরিবেশ বজায় রেখে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তি ছাড়া কথনও কোনো দেশের উন্নতি হয় না। এটা আমরা ভালো করে জানি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই সব সময় উন্নতি হওয়া সম্ভব।
শেখ হাসিনাকে বিশেষ সম্মামনা
এর আগে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) শীর্ষক এক ভার্চুয়্যাল কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন সরকারপ্রধান। সম্মেলনে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সন্তোষজনক অগ্রগতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ সম্মামনায় ভূষিত করা হয়।
টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক সম্মলনের প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি পূরণের জন্য জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় গরীব দেশগুলোকে সুষম বণ্টনভিত্তিক ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার আহবান জানান।
জলবায়ুতে বাংলাদেশ বিশ্বাবাসীর পথ প্রদর্শক
টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক ভার্চুয়্যাল কনফারেন্সে আংশগ্রহণের আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আমন্ত্রণে জলবায়ু বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা বিষয়ক নেতাদের রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে ছয়টি সুপারিশ পেশ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনার পেশ করা ৬ প্রস্তাবের মধ্যে অন্যতম হলো- বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে আহ্বান জানানো। এছাড়া উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়ের ওপরও জোর দেন। এ তহবিলের ৫০ শতাংশ বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার জন্য ব্যবহার করা হবে।
উন্নয়শীল দেশগুলোতে নতুন আর্থিক প্রক্রিয়া এবং সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লোকসান এবং ক্ষয়ক্ষতির সমস্যা এবং সেইসাথে বৃহৎ আকারের জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি মোকাবেলার আহ্বান জানান।
রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের আরও জোরালো ও শক্তিশালিী ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে বিশ্ববাসীর পথ প্রদর্শক।