করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও গত বছরে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। শুধু তাই নয়, পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে চীনের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। অন্যান্য শীর্ষ সরবরাহকারী দেশের মধ্যে রয়েছে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউরোস্ট্যাটের প্রতিবেদন অনুযায়ি, গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ইউরোপের বাজারে নয় হাজার ৫১৭ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে চীন দুই হাজার ৭৯৭ কোটি ৯৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। আর বাংলাদেশ করেছে ২ হাজার ১১৮ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক।
এহিসেবে ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে চীন প্রথম অবস্থানে রয়েছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্ব থেকে ৯৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭৭ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। বা শতাংশের হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
একই সময়ে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ২১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। কারণ বাংলাদেশ ইইউ এর জন্য পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের একই সময়ে ছিল ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার যার পরিমাণ এক হাজার ৫৩০ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার ইউএস ডলার।
ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল গণমাধ্যমকে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পোশাক আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেয়া কমায়নি। বাংলাদেশের পোশাকের মান ও সবুজ কারখানা গড়ে তোলা তথা অবকাঠামগত উন্নতির কারণে বাংলাদেশের পোশাকের প্রতি ঝোঁক তাদের আগের মতোই আছে।
অক্টোবর পর্যন্ত অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে তারা বেশি পোশাক নেয়ার চেষ্টা করেছে। তবে পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশ থেকেও পোশাক আমদানি কমিয়েছে বলেও তিনি জানান।