দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে কিছু বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে খোলা তেল কেজিতে ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে শীতের মৌসুমে শীতের সবজির সরবরাহ ভালো থাকলেও সবজির দাম নাগালের বাইরে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে বলে ইন্ডিপেন্টেন্ট টিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বরিশাল
প্রতিবেদনে বলা হয়, সপ্তাহের চেয়ে বরিশালের বাজারে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম। বাজারে ঘেরে চাষ করা মাছের সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম বাড়াকে সিন্ডিকেট মনে করছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে মাছ ধরা না পরায় বাজারে মাছের দাম বেড়েছে।
শুক্রবার বাজারে মাগুর মাছ ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, কৈ ২৫০, রুই ৩৫০-৪০০, কাতল ৪০০, চিংড়ি ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ ২২০০, ১২০০ গ্রাম ২৪০০, দেড় কেজি ২৫০০-২৬০০, ৮০০-৯০০ গ্রাম ১৮০০, ৫০০ গ্রাম ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। বেগুন ৮০, টমেটো ১৬০, শিম ৬০, ফুলকপি ৪০, কাঁচামরিচ ১০০, বরবটি ৮০, শালগম ৫০, মুলা ৪০, করলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে জেলার মুদি বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে খোলা সয়াবিনের দাম। বর্তমানে খোলা সয়াবিন কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা। এছাড়া আলু ৭০, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০, দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগে যে সিন্ডিকেট ছিল এখনও সেভাবেই আছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে দাম কমবে না।
বগুড়া
বগুড়ায় শীতকালীন কাঁচা শাক-সবজির আমদানি ভালো থাকলেও, দাম এখনও নাগালের মধ্যে আসেনি সাধারণ মানুষের। আলু, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ প্রতিটি সবজিতে এখনও বাড়তি মুনাফা লক্ষ্য করা গেছে বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
আজ জেলার বাজার ঘুরে জানা গেছে, আলু ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০-১৩০ ফুলকপি ৫০, বাঁধাকপি ৬০, শিম ১২০, বেগুন ৬০-৮০ আর নতুন আলু ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির এখন ভরা মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও দাম অনেক বেশি। বাজার ব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ জানিয়ে সঠিক, কঠোর ও নিয়মিত তদারকির দাবি জানান ভোক্তারা। এদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পণ্য সরবরাহের ওপরে দাম ওঠা-নামা করে।
চট্টগ্রাম
সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে আরো কমেছে সবজির দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। কিছুটা উঠানামার মধ্যে আছে মুরগির দাম। শুক্রবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশের নানা জায়গা থেকে বাজারে এসেছে বাহারী শীতকালীন সবজি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে সরবরাহ। তাই কমতির দিকে সবজির দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, সবজির সরবরাহ ভালো তাই দাম কম। অনেকটাই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ৫৭০ টাকায় দেশি এবং ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। ৫ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তাছাড়া এখন সামাজিক অনুষ্ঠান কিছুটা কম হওয়ায় মুরগির দাম ঠিক আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সিলেট
সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটের বাজারে কমেছে সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এ সপ্তাহে কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা কেজি, শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা। ফুলকপির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে এ সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কমেছে ঝিঙার দাম। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। তবে স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচামরিচের দাম।
এদিকে কমেছে পেঁয়াজের দাম। এ সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে আদা, রসুনের দাম। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা কেজিতে আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে।
বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করায় দাম কিছুটা কমছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিং নিয়মিত করার আহ্বান জানান ক্রেতারা।
খুলনা
খুলনার বাজারে লুস সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-১৯৫ টাকা দরে, আর বোতল সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা দরে। আর বোতল সয়াবিন তেলের সরবরাহ নাই বলছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা। শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি শালগম, লাউয়ের দাম কম হলেও দাম বাড়তি রয়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, শিমের দাম।
ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে, আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। টমেটো ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ ও রসুন ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বাজার সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্রেতারা।