অর্থবছরের শেষ একনেক সভা

উন্নয়ন ব্যয়ে সড়ক যোগাযোগ প্রাধান্য পেলো

বিশেষ প্রতিবেদক

জুন ২১, ২০২৩, ০৩:০৮ এএম

উন্নয়ন ব্যয়ে সড়ক যোগাযোগ প্রাধান্য পেলো

অর্থবছরের শেষে এসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি‍‍`র (একনেক) সভায় অনুমোদিত উন্নয়ন ব্যয়ে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রীসভার সদস্যরা ও সচিববৃন্দ এ সভায় অংশ নেন।

একনেকের এ সভায় বৃহৎ অংকের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচীতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হয়। মোট ১৬ প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। আর বৈদেশিক অর্থ বা প্রকল্প ঋণের পরিমান ১১ হাজার ৪৭২ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। এসব প্রকল্পের কয়েকটিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন প্রস্তাবনা আছে ১৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।

পাঠকের সুবিধার্থে অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো-
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অনুকূলে সুনামগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জগামী শাল্লা-জলসুখা সড়কের অংশবিশেষ নির্মাণব্যয় ৯৯৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১ হাজার ৭০ মিটার দৈর্ঘ্য টানেল অবকাঠামোযুক্ত পথচারী আন্ডারপাস নির্মান প্রকল্পে ১ হাজার ১৮৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়।

স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অনুকূলে ৪ হাজার ১৭৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের ৮ বিভাগের ৫৬ পৌরসভায় সড়ক, পানি নিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্হাপনা ও স্যানিটেশন অবকাঠামো গড়ে তুলতে ‍‍`নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরন প্রকল্প‍‍` (৩য় পর্যায়)।

স্হানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ‍‍`নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন‍‍` প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ বিভাগের ৪৮ জেলা ৮৭ উপজেলা ও ৮৮ পৌরসভায় টেকসই উন্নয়ন।

স্হানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৬ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। 
এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী ৫ বিভাগের ৩৪ জেলার ২০৬ টি উপজেলা। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বহুমূখী। এর মধ্যে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ ৪ হাজার ৬৫৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আর বাকী ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা সরকার এ প্রকল্পে যোগান দিবে। প্রকল্প মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত।

এর বাইরে চট্রগ্রাম বিভাগে ১১ জেলায় স্হানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়ক উন্নয়ন কাজ করবে। এজন্য প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ অর্থ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দিবে।

এছাড়াও, গাইবান্ধা জেলায় সড়ক উন্নয়নে ৯২৫ কোটি টাকা, রাজশাহী বিভাগে সড়ক উন্নয়নে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর- এ তিন জেলায় সড়ক উন্নয়নে ২ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা পৃথক প্রকল্পে ব্যয় করা হবে।

এছাড়াও বিশেষ একটি প্রকল্পের আওতায় দূর্যোগ ব্যবস্হাপনা অধিদপ্তরকে দেয়া হবে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ টাকায় দূর্যোগ ব্যবস্হাপনা অধিদপ্তর দেশের ৮ বিভাগের ৬৪ জেলায় ৪৯৪ উপজেলায় ৪৫৬২ ইউনিয়নে ৬৭৮৮.৭৮ কি.মি. ইট বিছানো (ব্রিকস্ সিলিং) গ্রামীন রাস্তা নির্মান করবে। প্রকৌশল বিদ্যার ভাষায় এ ধরনের রাস্তাকে হেরিং বোন বন্ড বা এইচবিবি বলা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনে সিগনালিং ও ইন্টারকলিং ব্যবস্হা প্রতিস্হাপনে ৬৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকীকরণ প্রকল্প, কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পূণর্বাসনের জন্য গৃহীত প্রকল্পে ৬৭৮ কোটি ৫০ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে।

একনেক সভায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বের্ড এর আওতাধীন কৃষিতে সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পে ৪০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে ৮ বিভাগের ২২ জেলায়।

এর বাইরে কক্সবাজার জেলার খুরুশকূলে একটি বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৬৭ কোটি ৪ লাখ ১১ হাজার টাকা।

Link copied!