মে ৯, ২০২৩, ০৪:৪২ পিএম
স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদা থেকে সহজে বেরিয়ে আসতে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সবুজায়ন প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে চায় ইউরোপিয় ইউনিয়ন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ঐতিহ্যগতভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া ও বিশ্বে দেশটির অবস্থান দ্রুত উন্নতির দিকে অগ্রসর হওয়ায় দেশটির সাথে ইউরোপিয় ইউনিয়নের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বেশ পরিবর্তন হচ্ছে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় ও পারষ্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে অনেক বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। আমরা সমুদ্র শাসন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির মতো বিষয়গুলোতে ব্যাহারিক দিক থেকে সহযোগিতা আরও গভীর করেছি।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, গ্লোবাল গেটওয়ে ইনিশিয়েটিভের আওতায় সংস্থাটির নেওয়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন পদক্ষেপ হলো- ইউরোপিয় ইউনিয়ন মুষ্টিমেয় যে কয়েকটি দেশে তার নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্যপ্রাধান্য দিচ্ছে বাংলাদেশ ওই দেশগুলোর মধ্যে একটি।
ইউরোপের এই কূটনীতিক আরও বলেন, বাংলাদেশে বায়ু ও সৌর শক্তির উন্নয়নে ইউরোপিয় ইউনিয়ন অনুদান ও ঋণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইউরো লাভের প্রত্যাশা করছি। আমরা আশা করছি ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সাথে আমাদের খুব তাড়াতাড়ি এ ব্যাপারে একটি চুক্তি সই হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয় ইউনিয়নের এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে অর্থ পেলেই বাংলাদেশে বায়ু ও সৌর শক্তির উন্নয়নে নেওয়া প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবো। এটি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা বর্তমানের ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার যে লক্ষমাত্রা রয়েছে তা পূরণে সহায়তা করবে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ বছরে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের উদ্ধার, ফিলিস্তিনি পুলিশবাহিনীকে সহায়তাসহ ৩৭টি বেসামরিক-সামরিক মিশনে ইউরোপিয় ইউনিয়ন যুক্ত রয়েছে। ইউরোপের বাইরে ১৪০টিরও বেশি ইইউ প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে (বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলসহ), যারা ইইউ-এর বাণিজ্য, রাজনৈতিক, উন্নয়ন এবং মানবিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন কৌশলগত পদ্ধতি’ প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাপী একটি নতুন উদ্যোগ ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ চালু করে ইউরোপিয় ইউনিয়ন। গ্লোবাল গেটওয়ের আওতায় বিশ্বজুড়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নে ইইউ প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করছে।বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়নে সহায়তার জন্যও ইউরোপিয় ইউনিয়নের অর্থায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।