ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শুরু হলো আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে রুপির ব্যবহার।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথ আয়োজনে ‘ভারতীয় রুপিতে বাংলাদেশ বাণিজ্য’ শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘এটা দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকারের নিদর্শন।’
রুপিতে লেনদেনের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ার আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ডলারের ওপর চাপ কমাতেই, দীর্ঘ চিন্তা ভাবনা করে আমরা এইপথে গিয়েছি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, টাকা-রুপির ডুয়েল কারেন্সি কার্ড চালু হলে ভারতের সাথে বাণিজ্যের সময় লেনদেনের খরচ কমবে। দ্বৈত মুদ্রা কার্ডগুলো প্রায় প্রস্তুত। এটি সেপ্টেম্বর থেকে চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি ব্যাঙ্গালোরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের সাথে দেখা করেছি। আমি তাঁকে দুটি জিনিসের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তার মধ্যে একটি হল রুপিতে ব্যবসা করা। রুপিতে লেনদেনে জনগণও উৎসাহী হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রুপিতে লেনদেনের সাথে একটি মানসিক সুবিধাও জড়িত। ভারতীয়রা যখন তাদের নিজস্ব মুদ্রায় পণ্য কিনবে, তখন তারা এটিকে তাদের নিজস্ব হিসাবে বিবেচনা করবে। আমি মনে করি এটি আমাদের বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে।
দেশের আমদানিকারকদের জন্য এই উদ্যোগ স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। কেন না পণ্য কিনতে রুপিতে এলসি খুলতে পারবেন তারা। ফলে ডলারের ব্যবহার কিছুটা কমবে।
এক বছর আগের তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। সরকার ডলারের ঘাটতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে যাওয়া রোধ করতে আমদানিবিধি কঠোর করেছে।
এরই মধ্যে রুপিতে লেনদেনের জন্য দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের সোনালী ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতীয় স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে অংশীদারদের সাথে নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে।
অন্যদিকে ২ দেশের মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের একটি অংশের মূল্য পরিশোধের সুবিধার্থে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে ভারতে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছে।