ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ। ১৯২১ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২ বছর পূর্ণ হলো আজ। দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালির জাতির জন্য শুধুমাত্র শিক্ষিত নাগরিক তৈরি করেনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাঙালি জাতির আলাদা পরিচয় ও জাতিসত্তা পরিচয়ের জন্য কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠার ত্রিশ বছরের মাথায় দেশের সবচেয়ে বেশি মানুষের ভাষা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরেই দেশের সমাজ উচ্চশিক্ষার পথে হেঁটেছে; এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করেছে, বেগবান করেছে এবং দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের চিন্তা ও সক্রিয়তার প্রেক্ষাপটটি তৈরি করেছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং এর পরবর্তী সব জনআন্দোলন ও সংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। এখনো সারা দেশের সুস্থ চিন্তা বিকাশের, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কেন্দ্র হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯২১ সালের ১ জুলাই দেশের প্রথম এই উচ্চ শিক্ষায়তনের কার্যক্রম শুরু হয়। তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, তিনটি আবাসিক হল, ৬০ শিক্ষক এবং ৮৭৭ শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই বিশ্ববিদ্যালয় নানা ঐতিহাসিক ঘটনার পথ পরিক্রমায় এখন শতবর্ষ পেরিয়েছে।
শতবর্ষ পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১০২ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে এক বাণীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক নানামুখী অভিঘাত মোকাবিলা করে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
বাণীতে তিনি লেখেন, যুগ ও সমাজের চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, নতুন নতুন উদ্ভাবন, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মুক্তচিন্তার উন্মেষ ও বিকাশ, সৃজনশীলতার চর্চা এবং নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। কারিকুলাম ও পাঠক্রমের আধুনিকায়ন এবং মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার প্রতি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।