রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের `এ` ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় শিফটের প্রশ্নপত্রে ৪টি ভুল প্রশ্ন ধরা পরেছে। প্রশ্নের ৩, ১৪, ১৬ ও ১৭ নম্বর প্রশ্নে ভুল পাওয়া যায়। ৪ টি প্রশ্নের মান ৫ নম্বর৷ এমন ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে শঙ্কায় আছেন ভর্তিচ্ছুরা। অন্যদিকে এমন ভুলকে চরম দায়িত্বহীনতার শামিল বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপকরা।
অধ্যাপকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির সঙ্গে জড়িত। তাই এই বিষয়ে সিনিয়র ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষের ওপর দায়িত্ব দেওয়া উচিত, যাতে এমন ভুল না হয়। কিন্তু সেটি হয়ে গেছে। যেখানে এক নম্বরের জন্য শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। সেখানে ৫ নম্বরের প্রশ্নের ভুল কোনোভাবেই মেনে যাওয়া যায় না। এই ভুলের দায় ভর্তি কমিটির এড়িয়ে যেতে পারে না।
প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় শিফটের তিন নম্বর সেটের প্রশ্নপত্রে ৪টি প্রশ্নে ভুল দেখা যায়। প্রশ্নপত্রের ৩ ও ১৭ নম্বর প্রশ্নে মাত্র চারটি অপশনের জায়গায় মাত্র দুটি অপশন এবং ১৪ ও ১৬ নম্বর প্রশ্নে ৫টি করে অপশন দেখা গিয়েছে৷
ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা দেওয়া মাগুরা থেকে আসা শিক্ষার্থী আবু তালহা বলেন, ‘আমি কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর ভুল দেখতে পাই। তখন দায়িত্বরত স্যারকে এ বিষয়ে বলি। কিন্তু তিনি কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এই প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে কেমন মূল্যায়ন হবে এটা নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি।’
প্রশ্নপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোলাইমান চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন ভুল মোটও কাম্য নয়। কারণ এই প্রক্রিয়াটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। আর যেসব প্রশ্ন আসলে ভুল হয়েছে সেগুলো কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে? মূলত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়গুলো এমন মানুষদের দেওয়া উচিত যারা এ বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির প্রধান ব্যাপার হলো ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি ও প্রশ্নপত্রের মান। সেখানে এবার পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আর এসব ভুল প্রশ্ন কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে সেটা অত্যন্ত জটিল ব্যাপার। সব মিলিয়ে এমন ঘটনা খুব দায়িত্বহীনতার সামিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘যদি কোনো প্রশ্নপত্রে ভুল থাকলে তাহলে `এ` ইউনিটের সকল অনুষদের ডিন বিষয়টি নিয়ে বসবেন৷ কোনো শিক্ষার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন৷ সাধারণত এমন হলে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নের মান অনুযায়ী নম্বর পেয়ে যায়। তবে প্রশ্নপত্র তৈরিতে কারো গাফিলতি ছিল কিনা অনুষদের ডিনরা সেটি খতিয়ে দেখবেন৷’