দেশজুড়ে ঈদ-উল-আযহার উৎসব চলছে পুরোদমে। প্রতিটি ঘরেই চলছে কোরবানির মাংস দিয়ে নানা পদের সুস্বাদু খাবার তৈরির ধুম।
গরু ও খাসির মাংসের বিভিন্ন রকমের কারি, তেহারি, খিচুড়ি, ফিরনি, সঙ্গে ভাজাপোাড়াা ও মিষ্টান্ন—ঈদের খাবার যেমন সুস্বাদু, তেমনি ভারী ও অধিক পরিমাণে খাওয়ার প্রবণতা থাকে।
তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে দেখা দিতে পারে গ্যাস্ট্রিক, অম্বল, পেট ফাঁপা, হজমে ধীরগতি, এমনকি দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত তেল-ঝাল বা চিনি মেশানো খাবার হঠাৎ করে বেশি খেলে পাকস্থলীতে চাপ পড়ে। এর ফলে অম্বল, গ্যাস, হজমের সমস্যা, এমনকি অস্বস্তিকর গ্যাস্ট্রিকের উপসর্গ দেখা দেয়। বয়স্ক ব্যক্তি বা আগে থেকেই যাদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য পরিস্থিতি হতে পারে আরও জটিল।
কেন ঈদের ভোজে পেটের সমস্যা বাড়ে?
ঈদের দিনে ও পরের কয়েকদিনে অনেকেই দিনে একাধিকবার বেশি পরিমাণে গরু বা খাসির মাংস খেয়ে থাকেন। এর সঙ্গে কোরমা, রেজালা, বিরিয়ানি জাতীয় চর্বিযুক্ত খাবার এবং সেমাই ও মিষ্টির মতো ভারী মিষ্টান্ন যুক্ত হলে হজমব্যবস্থা বেশ চাপে পড়ে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, দ্রুত খাওয়া, সবজি বা আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়া এবং খাওয়ার সময় কোল্ড ড্রিংকস বা সোডা জাতীয় পানীয় গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আরও বাড়ে। অনেকেই ভারী খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রামে চলে যান বা ঘুমিয়ে পড়েন, এতে হজম আরও শ্লথ হয়ে পড়ে।
ঈদের ভোজ উপভোগ করুন, হজমের সমস্যাও এড়ান – ৫টি পরামর্শ
অল্প আহার গ্রহণ করুন: খাবার একসাথে বেশি না খেয়ে ভাগ করে খান। কম পরিমাণে শুরু করুন।
আঁশযুক্ত খাবার যোগ করুন: খাবারের সঙ্গে শসা, সালাদ, সবজি রাখুন যাতে হজম সহজ হয়।
পানি খান, কোমল পানীয় নয়: কোলা বা গ্যাসযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন—এগুলো পেট ফাঁপা ও অম্বল বাড়ায়।
ভালোভাবে চিবিয়ে খান: ধীরে খেলে হজমে সহায়ক এনজাইম কাজ করতে পারে।
খাওয়ার পর হালকা হাঁটা: খাওয়ার পরে সামান্য হাঁটাহাঁটি করলে হজম ভালো হয়, অস্বস্তিও কমে।
যাদের বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন
বয়স্ক মানুষ, শিশু, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, লিভার বা কিডনি সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য ঈদের ভারী খাবার হতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের জন্য হালকা খাবার, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত পদ এড়িয়ে চলা ও যথেষ্ট পানি পান করাটা খুব জরুরি।