কক্সবাজারে এইডসের প্রকোপ বেড়েছে: আক্রান্ত ৭১০, রোহিঙ্গা ৬১২ জন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২২, ০৫:৫৮ পিএম

কক্সবাজারে এইডসের প্রকোপ বেড়েছে: আক্রান্ত ৭১০, রোহিঙ্গা ৬১২ জন

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এইচআইভি (এইডস) ভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ। গত জুন মাসে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭১০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬১২ জনই রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে মারা গেছেন ১১৮ জন। এইডসে আক্রান্ত হওয়ার এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান।

সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১০ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছে ৫০৫ জন ও উখিয়া হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ২০৫ জন। এদের মধ্যে ৯৮ জন স্থানীয় নাগরিক। মারা যাওয়া ১১৮ জনের মধ্যে ৬১ জন রোহিঙ্গা এবং ৫৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা। রোহিঙ্গাদের অসচেতনতার কারণে তাদের কাছ থেকে এই রোগ কক্সবাজারের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরার কারণে এই রোগের সংখ্যা কক্সবাজারে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এছাড়া কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা তরুণীর যাতায়াত লক্ষ্য করা গেছে। এসব কারণে রোগটি এখানে ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গারা যেহেতু কক্সবাজার এলাকা জুড়ে রয়েছে, সেহেতু তাদের সাথে স্থানীয়রা মেলামেশা করছেন। এমনকি শারিরীক সম্পর্কেও জড়াচ্ছেন অনেকে। এক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করলে এইচআইভি ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এইচআইভি নিয়ে কাজ করা এনজিওদের কাছ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে জেলায় রোহিঙ্গা ছাড়াও স্থানীয় ২ হাজারের মতো যৌনকর্মী রয়েছে। যাদের বেশিরভাগের এইচআইভি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। ফলে তাদের মধ্যে কতজনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান জানান, বিশ্ব এখন রোহিঙ্গাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য সুরক্ষার। রোহিঙ্গা আসার আগে তেমন এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। রোহিঙ্গাদের কাছে এইচআইভি রোগের প্রাদুর্ভাব থাকার কারণে ও তাদের অবাধ মেলামেশা ও এক জায়গা বেশি সংখ্যক জনবল হওয়ার কারণে এইচআইভি ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। রোগটি দীর্ঘ মেয়াদী হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে। যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা চিহ্নিত না থাকায় এই রোগ আরো ব্যাপকভাবে ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Link copied!