বেটা
নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৩১, ২০২১, ১২:১৬ এএম
এডিস মশার কামড়ে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় তিনগুণ বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৩১ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন একজন। বুধবার গত ২৪ ঘন্টায় ১১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ৩১ জন নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু রোগী হিসেবে হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে ১০৫ জন মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ কামরুল কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৩১ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ জন। অন্য ২৯ জন রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম ডেঙ্গু রোগী গণনা শুরু হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ডেঙ্গুতে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। আর ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত হন ৫ হাজার ৫৫১ জন।
প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। আর আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের বেশি। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারির প্রকোপের মধ্যে ডেঙ্গু কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। ওই বছর এ সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর’র দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০০ সালে ডেঙ্গুতে সারাদেশে প্রাণ যায় ৯৩ জনের। ২০০১ সালে ৪৪ জন, ২০০২ সালে ৫৮, ২০০৩ সালে ১০ জন মারা যান। তবে ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর ডেঙ্গুতে কোনো প্রাণহানি হয়নি বলে আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, চার বছর বিরতি দিয়ে ২০১৫ সালে ছয়জন, ২০১৬ সালে ১৪ জন, ২০১৭ সালে আটজন এবং ২০১৮ সালে ২৬ জন ডেঙ্গুতে মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছেন ৩৪ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২৯ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৮ হাজার ৪২৫ জনের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ২৮ হাজার ২৫৭ জন।
এদিকে, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। চলতি বছরের জুলাই মাসে ১২ জনের মৃত্যু হলেও পরের এক মাসেই (আগস্ট) ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ১০৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর নভেম্বরে ৪ জন, অক্টোবরে ২২ জন, সেপ্টেম্বরে ২৩ জন, আগস্টে ৩৪ জন এবং জুলাইতে ১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সব মিলিয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু জ্বরে।
