ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২১, ১২:০৪ পিএম
এককালে এদেশে ক্যান্সার ছিল সিনেমার রূপালি পর্দার নায়ক-নায়িকাদের রোগ। ‘বড়লোকদের’ রোগ। এখন দিনকাল পাল্টেছে। এদেশে এখন প্রায় ঘরে ঘরে এই রোগ বাসা বেঁধেছে। খ্যাদ্যে ভেজালসহ নানা কারণে ক্যান্সার এখন ভয়াল রূপ নিয়েছে এ দেশে।
গত এক বছরে দেশে নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে দেড় লাখেরও বেশি। যারমধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৮ হাজার ৯৯০ জন। ক্যানসার সম্পর্কিত গ্লোবা্ল অনলাইন ডাটাবেজ গ্লোবোক্যানের করা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। বর্তমানে দেশে ক্যান্সার রোগী আছেন ১৫ লাখেরও বেশি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালেই ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের আক্রান্ত সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭৫ জন যেখানে ইসোফেগাস (খাদ্যনালী) ক্যান্সারে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা ২১ হাজারেরও ওপরে। ঠোঁট এবং মৌখিক গহ্বর ক্যান্সার আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। এছাড়া স্তন ক্যান্সারে ১৩,০২৮ জন এবং ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা গেছেন আরও ১২ হাজার ৯৯৯ জন।
২০১৯ সালে আক্রান্ত ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮১ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, দেশে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ লাখেরও বেশি। এবং প্রতি বছর মারা যায় দেড় লাখ মানুষ।
চিকিৎসা সংকটের পাশাপাশি ক্যান্সার বিষয়ক অসচেতনতা ও অসুস্থ জীবনযাপনকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস। ‘আই অ্যাম অ্যান্ড আই উইল’- এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বিশব্যাপী ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন এগেইনস্ট ক্যানসার কন্ট্রোল (ইউআইসিসি)। ২০০৮ সালে প্রথম ক্যান্সার দিবস পালনের উদ্যোগ নেয় সংগঠনটি।
ক্যান্সার এওয়ারনেস প্রোগ্রাম ফর উইমেন এর সাধারণ সম্পাদক মুহাইমিনুল ইসলাম শাওন দ্য রিপোর্টকে বলেন, সুষম খাদ্যাভ্যাস, সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন ও সর্বোপরি জনসচেতনতার মাধ্যমে ক্যান্সার অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে প্রতিটি বিভাগে আঞ্চলিক ক্যান্সার কেন্দ্র স্থাপন করা উচিত।
ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে ক্যান্সারে আক্রান্তের হার অনেকাংশেই কমে আসবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে ৮টি বিভাগে ৮টি আঞ্চলিক ক্যানসার কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। দেশের সব মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসার চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি সুবিধা যুক্ত করতে হবে।
এছাড়াও, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বল্প ব্যয়ে চিকিতসার আওতায় আনার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরোও বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরকারি বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও জনসচেতনতা কর্মসূচি নিতে হবে।