তিন বছর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যে ব্যক্তিত্ব দেখেছিলেন গত সপ্তাহে মস্কোতে বৈঠকের সময় তার আমূল পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সূত্রের বরাত দিয়ে লন্ডনের স্থানীয় সময় শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে হামলা করলে চড়া মূল্য দিতে হবে
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে পুতিনের ম্যারাথন বৈঠক হয়েছে। আলোচনার বেশিরভাগ সময় শীতল যুদ্ধের শেষের দিকে পশ্চিমারা সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যে আচরণ করেছে সেই অভিযোগগুলো তুলে ধরেছেন পুতিন। ম্যাক্রোঁ তিন বছর আগে ফ্রেঞ্চ রিভেরায় তার গ্রীষ্মকালীন বাসভবনে যে ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছিলেন তার থেকে পুতিন এখন কতটা আলাদা তা দেখে হতবাক হয়েছেন।
ম্যাক্রোঁর সফরসঙ্গী দুই সূত্রের এক জন বলেছে, ‘(পুতিন) তাকে পাঁচ ঘণ্টায় ঐতিহাসিক সংশোধনবাদ শুনিয়েছে।’
ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকে পুতিন আরও অভিযোগ করেছেন, সাবেক সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলোকে জোটভুক্ত না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ন্যাটো। ১৯৯৭ সাল থেকে রাশিয়ার সঙ্গে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আসছে পশ্চিমারা।
সোমবার ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিনের পরিবর্তনের ইঙ্গিতও মিলেছে। তিনি যে আর পশ্চিমাদের মোড়লিপনা সহ্য করবেন না তা স্পষ্টই জানিয়েছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “আপনি জানেন, আমরা ৩০ বছর ধরে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ এড়ানোর জন্য তাদের (পশ্চিমা বিশ্ব) সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। আমরা প্রতিক্রিয়া হিসাবে যা পাই তা হল আমাদের উদ্বেগের প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা।”
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ম্যাক্রোঁ তার সফরসঙ্গীদের বলেছিলেন, ২০১৯ সালে ফ্রান্সে পুতিন যখন এসেছিলেন, তখন তাকে এই সময়ের তুলনায় ‘কম কঠিন এবং ইতিহাসের প্রতি কম মনোযোগী’ বলে মনে হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। এর জেরে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তবে এরপরও পুতিন সেনাদের সরিয়ে আনেননি। বরং শুক্রবার স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, ইউক্রেন সীমান্তে নতুন করে আরও সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন নাগরিকদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দেয় হোয়াইট হাউজ প্রশাসন।