জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৬:৫২ পিএম
নানা ঘটন-অঘটনে বিদায় নিয়েছে ২০২২। নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে ২০২৩। কেমন যাবে বছরটি- সে বিষয়ে দশটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড হাস।
দৈনিক প্রথম আলো এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেছে।
এক.
মহামারী কোভিড বিদায় নিতে না নিতেই শুরু হযেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক নানা সংকট দেখা দিয়েছে।
এই লড়াইয়ের সামরিক বিজয় বলতে যদি এক পক্ষের দ্বারা অন্য পক্ষকে সামরিকভাবে ধসিয়ে দেওয়া এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সীমানা নির্ধারণ ও রাজনৈতিক মীমাংসার শর্তাবলি নির্ধারণের ক্ষমতা প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করা পক্ষটির হাতে থাকা দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাহলে সেই সংজ্ঞা অনুসারে এই যুদ্ধে এই বছর রাশিয়া বা ইউক্রেন—কেউই সম্পূর্ণ সামরিক বিজয় পাবে না।
দুই.
যদিও অনেক নীতিনির্ধারক তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আশঙ্কার কথা বলছেন, তবে ২০২৩ সালে এই যুদ্ধের আশঙ্কা খুবই কম বলে মনে হচ্ছে। বেইজিং আগামী অন্তত কয়েক বছরের মধ্যে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেবে না। এর বদলে তারা তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়াতে থাকবে।
তিন.
জাপান তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনা আগ্রাসন ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে শরিক হবে।
চার.
ঘন ঘন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা ছাড়াও উত্তর কোরিয়া প্রায় নিশ্চিতভাবেই সপ্তমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা চালাবে।
পাঁচ
ইউক্রেনকে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন দেওয়া এবং প্রতিরক্ষা ব্যয়ের মাত্রা নিয়ে মতপার্থক্যের সূত্র ধরে ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ক নষ্ট হবে।
ছয়.
বেশির ভাগ পর্যবেক্ষক বিশ্ব অর্থনীতির প্রসারণ সম্পর্কে যে পূর্বাভাস দিচ্ছেন, অর্থনীতি তার চেয়ে ধীরগতিতে প্রসারিত হতে পারে। আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কিছু অংশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার ফল এবং বৈশ্বিক সরবরাহ-শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়াও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার রাশ টেনে ধরবে।
সাত.
জাতিসংঘের বার্ষিক জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে (দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় কপ ২৮) হতাশার সুর অব্যাহত থাকবে।
আট.
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সম্পর্ক আরও সহিংস হয়ে উঠবে। কারণ, ইসরায়েল তার দখলদারিমূলক বসতি স্থাপনের কাজ প্রসারিত করবে এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য শর্তে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ইসরায়েলের কূটনীতি এগোবে না।
নয়.
ভারত মহা মহা কিছু অর্জন করবে বলে যাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, দেশটি তাঁদের হতাশ করতে থাকবে। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ও তেল কেনা চালিয়ে যাবে এবং চীনের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের কাছ থেকে বড় ধরনের সহায়তা চাইলেও জোটনিরপেক্ষতার ভঙ্গিতে অনড় থাকবে।
দশ.
সম্ভবত ২০২৩ সালের সবচেয়ে জোরালো ইস্যু হবে ইরান। ইরানের অর্থনৈতিক অবনতি এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আপস করা হবে, নাকি তাঁদের গ্রেপ্তার করে হত্যা করা হবে—এই নিয়ে নেতাদের মধ্যে দলাদলি বাড়বে এবং সেটি বিক্ষোভকে জনগণের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।